রাশিয়া ও বেলারুশের যৌথ সামরিক মহড়া ‘জাপাদ-২০২৫’-এ অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ-ভারতসহ আরো ছয়টি দেশ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। এর মধ্যেই যৌথ সামরিক মহড়ায় ভারতীয় সেনাদের অংশগ্রহণ মস্কো-নয়াদিল্লির ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের দিকে ইঙ্গিত করছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে, পাঁচ দিনের সামরিক মহড়ায় অংশ নিতে ৬৫ জন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যকে পাঠানো হয়েছে। রাশিয়া ও বেলারুশের যৌথভাবে আয়োজন করা এই মহড়ায় সম্ভাব্য আক্রমণের ক্ষেত্রে সামরিক প্রস্তুতি পরীক্ষা করা হয়।
মহড়ায় এক লাখ সেনা অংশ নেয় এবং পারমাণবিক বোমারু বিমান ও যুদ্ধজাহাজ প্রদর্শন করা হয়। ন্যাটো দেশগুলোর সাথে উত্তেজনার মধ্যেই এই মহড়া অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত সপ্তাহে পোল্যান্ডে রুশ ড্রোন ভূপাতিত করার কয়েকদিন পর মহড়াটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সামরিক পোশাক পরে ঘোষণা দেন, ‘আজ আমরা জাপাদ-২০২৫ কৌশলগত মহড়ার চূড়ান্ত অংশ পরিচালনা করছি।’
ক্রেমলিনের বরাত দিয়ে রুশ বার্তাসংস্থা তাস জানিয়েছে, ভারত ছাড়াও ইরান, বাংলাদেশ, বুরকিনা ফাসো, ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো (ডিআরসি) ও মালি থেকে সামরিক প্রতিনিধিরা অংশ নেয়।
আল জাজিরার মতে, মহড়ায় ভারতের অংশগ্রহণ বিশেষ নজর কেড়েছে। রাশিয়ার সাথে ‘সহযোগিতা ও পারস্পরিক আস্থার মনোভাব’ জোরদার করার লক্ষ্যে দেশটির কুমাওন রেজিমেন্টের একটি ব্যাটালিয়নের নেতৃত্বে ভারতীয় সেনারা এই মহড়ায় অংশ নেয়। এতে ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র হয়তো এশিয়ায় এমন এক গুরুত্বপূর্ণ মিত্রকে হারাতে পারে যে মিত্রকে দীর্ঘদিন ধরে চীনের মোকাবেলায় ভারসাম্য রক্ষাকারী হিসেবে দেখে এসেছে ওয়াশিংটন।
গত মাসে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতীয় আমদানির ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, রাশিয়ার তেল কেনার মাধ্যমে নয়াদিল্লি ইউক্রেনে মস্কোর আক্রমণকে পরোক্ষভাবে সমর্থন দিচ্ছে।
চলতি মাসের শুরুতে ভারত ও রাশিয়া চীনের তিয়ানজিনে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে একত্রিত হয়েছিল। সে সময় ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বার্তায় বলেন, ভারত ও রাশিয়া উভয়ই ‘গভীর ও অন্ধকার চীনের’ কাছে হারিয়ে গেছে।