ফরাসি উপনিবেশকে ‘রাষ্ট্রীয় অপরাধ’ ঘোষণায় আইন প্রণয়নে আলজেরিয়ার পার্লামেন্টে ভোট

ফ্রান্সের উপনিবেশকে ‘রাষ্ট্রীয় অপরাধ’ ঘোষণা করতে আলজেরিয়ার পার্লামেন্টে বুধবার একটি আইন প্রণয়নের ব্যাপারে ভোটাভুটি হতে যাচ্ছে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
ফরাসি উপনিবেশকে ‘রাষ্ট্রীয় অপরাধ’ ঘোষণায় আইন প্রণয়নে আলজেরিয়ার পার্লামেন্টে ভোট
ফরাসি উপনিবেশকে ‘রাষ্ট্রীয় অপরাধ’ ঘোষণায় আইন প্রণয়নে আলজেরিয়ার পার্লামেন্টে ভোট |বাসস

ফ্রান্সের উপনিবেশকে ‘রাষ্ট্রীয় অপরাধ’ ঘোষণা করতে আলজেরিয়ার পার্লামেন্টে বুধবার একটি আইন প্রণয়নের ব্যাপারে ভোটাভুটি হতে যাচ্ছে। দেশটি ফ্রান্সকে ক্ষমা প্রার্থনা ও ক্ষতিপূরণের দাবিও জানাবে।

এই ভোট এমন সময়ে হচ্ছে যখন দুই দেশ বড় ধরনের কূটনৈতিক সঙ্কটে জড়িয়ে আছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, আলজেরিয়ার এই পদক্ষেপ মূলত প্রতীকী হলেও রাজনৈতিকভাবে তা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

বিলটিতে বলা হয়েছে, ফ্রান্স আলজেরিয়ায় এর ঔপনিবেশিক অতীত। এর ফলে সৃষ্ট ট্র্যাজেডির জন্য আইনিভাবে দায়ী।

পার্লামেন্টের স্পিকার ব্রাহিম বুগালি’কে উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এপিএস জানিয়েছে, প্রস্তাবিত আইনটি ‘একটি সার্বভৌম পদক্ষেপ’।

তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত উভয় ক্ষেত্রেই এটি একটি স্পষ্ট বার্তা, আলজেরিয়ার জাতীয় স্মৃতি মুছে ফেলা যায় না।

১৮৩০ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত আলজেরিয়ায় ফরাসি উপনিবেশ দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এখনো একটি সংবেদনশীল বিষয়। আলজেরিয়ায় ফরাসি শাসন ছিল গণহত্যা ও ব্যাপক নির্বাসন ঘিরে। এ শাসন ১৯৫৪ থেকে ১৯৬২ সালের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধ পর্যন্ত চলে।

আলজেরিয়া বলছে, যুদ্ধে ১৫ লাখ মানুষ নিহত হয়েছিল। অন্যদিকে, ফরাসি ইতিহাসবিদরা মোট মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে ৫ লাখ বলে উল্লেখ করেছেন, যার মধ্যে ৪ লাখই আলজেরিয়ান।

এর আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আলজেরিয়ার উপনিবেশকে ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ হিসেবে স্বীকার করেছেন। তবে এর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেননি তিনি।

যুক্তরাজ্যের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের ঔপনিবেশিক ইতিহাস গবেষক হোসনি কিতুনি বলেন, আইনগতভাবে এই আইনটির কোনো আন্তর্জাতিক পরিসর নেই। তাই এটি ফ্রান্সের জন্য বাধ্যতামূলক নয়।

তবে তিনি বলেন, এর রাজনৈতিক ও প্রতীকী গুরুত্ব রয়েছে। এটি ইতিহাসের ক্ষেত্রে ফ্রান্সের সাথে সম্পর্কের একটি বিচ্ছেদকে চিহ্নিত করে।

সূত্র : এএফপি/বাসস