ঘূর্ণিঝড় ‘দিতওয়া’র প্রভাবে টানা প্রবল বর্ষণে শ্রীলঙ্কাজুড়ে এখন পর্যন্ত ১২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরো ১৩০ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে শনিবার জানিয়েছে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি)।
কেন্দ্রের মহাপরিচালক সাম্পাথ কোটুওয়েগোদা জানান, উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চলছে। সপ্তাহব্যাপী ভারী বর্ষণে ঘরবাড়ি ধ্বংস হওয়ায় ৪৩ হাজার ৯৯৫ জনকে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
ডিএমসি জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি দ্বীপরাষ্ট্রটি ছেড়ে প্রতিবেশী ভারতের দিকে সরে যাচ্ছে। তবে এর আগেই এটি ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সোমবার থেকে অনুভূত হলেও বুধবার এটি সরাসরি আঘাত হানে। এর ফলেই দ্বীপজুড়ে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে।
কোটুওয়েগোদা কলম্বোতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তায় ত্রাণ কার্যক্রম চলছে।’
শনিবার নিচু এলাকাগুলোতে বন্যার পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ায় কেলানি নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কেলানি নদী কলম্বো হয়ে ভারত মহাসাগরে গিয়ে মিশেছে।
ডিএমসি বলেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় কেলানি নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় শত শত মানুষ অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হন।
রাজধানীসহ দেশের বেশিরভাগ অংশে বৃষ্টিপাত কমে এসেছে। তবে ঘূর্ণিঝড় ‘দিতওয়া’র অবশিষ্ট প্রভাবে দ্বীপের উত্তরাঞ্চলে এখনো বৃষ্টি হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার ভোরে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য এক বিমান ভর্তি ত্রাণসামগ্রী পাঠিয়েছে ভারত।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শ্রীলঙ্কায় প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে বলেছেন, নয়াদিল্লি আরো সহায়তা পাঠাতে প্রস্তুত।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’-এর পোস্টে মোদি বলেন, ‘পরিস্থিতি পরিবর্তিত হওয়ার সাথে সাথে আমরা আরো সাহায্য ও সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছি।’
সরকার উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা বাড়াতে সারাদেশে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করেছে। আটকা পড়া বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে সামরিক হেলিকপ্টার ও নৌকা ব্যবহার করা হচ্ছে।
ডিএমসি কর্মকর্তারা এই বন্যার মাত্রা ২০১৬ সালের চেয়েও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন। সে বছর দেশজুড়ে ৭১ জন নিহত হয়েছিল। গত বছরের জুনে ভারি বৃষ্টিতে ২৬ জন নিহত হয়েছিল। এর পর আবহাওয়া সংক্রান্ত ঘটনায় এটিই সর্বোচ্চ প্রাণহানি। গত ডিসেম্বরেও বন্যা ও ভূমিধসে ১৭ জন মারা গিয়েছিল। এই শতকে শ্রীলঙ্কায় সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল ২০০৩ সালের জুনে, তখন ২৫৪ জন নিহত হয়েছিল।
সূত্র : এএফপি/বাসস



