উগ্রবাদীগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের আঞ্চলিক শাখা আইএস-খোরসান (আইএস-কে)-এর এক শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পাকিস্তান।
আজ শুক্রবার পাকিস্তানের এক ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জাতিসঙ্ঘ নিষেধাজ্ঞা পর্যবেক্ষণকারী দলের একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই গ্রেফতারের খবর সামনে আসে।
গ্রেফতার হওয়া ওই নেতার নাম সুলতান আজিজ আজম। তিনি আইএস-কে’র মুখপাত্র হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। গত নভেম্বরে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে জমা দেয়া এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৫ সালের ১৬ মে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে পাকিস্তানের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, ‘আজম কেবল মুখপাত্রই ছিলেন না। বরং এই অঞ্চলে গোষ্ঠীর অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হতো।’
তিনি আরো জানান, আজমকে জিজ্ঞাসাবাদের পর শুরু হওয়া সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানগুলো যাতে ব্যাহত না হয়, সেজন্য এতদিন এই গ্রেফতারের খবর গোপন রাখা হয়েছিল।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আফগানিস্তান, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর চালানো ভয়াবহ কিছু হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস-কে। ২০২৪ সালের মার্চে মস্কোর একটি কনসার্ট হলে ভয়াবহ হামলায় ১৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহতের ঘটনায় এই গোষ্ঠীটি জড়িত ছিল।
এছাড়া ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে এবং পাকিস্তানে বেশ কিছু প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে তারা।
তবে আজমকে ঠিক কোন দেশ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সে বিষয়ে গোয়েন্দা কর্মকর্তা বা জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্ট কিছু জানানো হয়নি।
তালেবান কর্তৃপক্ষ বরাবরই নিরাপত্তা রক্ষার বিষয়ে অঙ্গীকার করে আসছে এবং তারা আইএস-কে ও আফগানিস্তানে সক্রিয় অন্যান্য উগ্রবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তান ও তালেবান-উভয় পক্ষের অভিযানের ফলে আইএস-কে’র সক্ষমতা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘অভিযানের কারণে আইএস-কে’র শক্তি কমলেও গোষ্ঠীটি এখনো টিকে আছে।’ ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমানে তাদের প্রায় ২ হাজার সদস্য রয়েছে।
গোষ্ঠীটির নেতারা এখন নতুন সদস্য সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছে এবং আফগানিস্তানের বাইরে হামলা চালানোর জন্য ‘স্লিপার সেল’ নেটওয়ার্ক তৈরির পরিকল্পনা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংক-ট্যাংক জেমসটাউন ফাউন্ডেশনের তথ্য মতে, আজমের বাড়ি আইএস-কে’র শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আফগানিস্তানের নানগারহার প্রদেশে। ২০১৫ সালে আইএস-কে’তে যোগ দেয়ার আগে তিনি একজন কবি ও লেখক হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ পরিচিত ছিলেন।
সূত্র : এএফপি/বাসস



