চাকরিতে যোগ দিলেন না বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর হেনস্থার শিকার সেই হিজাবি চিকিৎসক

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার যে নারী চিকিৎসকের হিজাব খুলে দিয়েছিলেন, তিনি কাজে যোগ দেননি।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর হেনস্থার শিকার সেই হিজাবি চিকিৎসক
বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর হেনস্থার শিকার সেই হিজাবি চিকিৎসক |সংগৃহীত

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার যে নারী চিকিৎসকের হিজাব খুলে দিয়েছিলেন, তিনি কাজে যোগ দেননি। শনিবারই ছিল চাকরিতে যোগদানের শেষ দিন। কিন্তু ওই নারী চিকিৎসক যাননি। এর মধ্যে ঝাড়খণ্ড সরকার থেকে ওই নারী চিকিৎসককে চাকরির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। মোটা অঙ্কের মাসিক বেতন দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওই রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে বিতর্কের কেন্দ্রে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। ওই দিন তার হাত থেকে চাকরির নিয়োগপত্র নিতে এক নারী চিকিৎসক মঞ্চে উঠেছিলেন। কিন্তু তিনি হিজাব পরে আছেন দেখে বিরক্ত হন নীতীশ। ‘এটা কী’ বলে টান মেরে খুলে দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর ওই আচরণ নিয়ে শোরগোল শুরু হয়ে যায়। পক্ষে-বিপক্ষে মতামত চলছে। এর মধ্যে জানা গেল, যে চিকিৎসকের সাথে নীতীশ ওই আচরণ করেছিলেন, তিনি কাজে যোগই দেননি। জানা যাচ্ছে, শনিবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে পটনা সদরের সবলপুর কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে (সিএইচসি) তার রিপোর্ট করার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও তার দেখা মেলেনি। সেখানকার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘এবার যদি স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে যোগদানের তারিখ বাড়ানো হয়, তখন আবার নোটিশ জারি করা যেতে পারে।’ কিন্তু ওই নারী চিকিৎসক কোনো প্রতিক্রিয়াই দেননি।

হিজাব বিতর্কে ঝাড়খণ্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইরফান আনসারি বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর নিন্দা করে জানিয়েছেন, ওই নারী চিকিৎসক চাইলে তার রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে যোগদান করতে পারেন। ইরফান বলেন, ‘ঝাড়খণ্ডে উনি মাসিক ৩ লাখ টাকা বেতন পাবেন। সরকারি কোয়ার্টারও দেয়া হবে।’ কেন এই আহ্বান? ঝাড়খণ্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জবাব, ‘আমি প্রথমে ডাক্তার, তারপরে মন্ত্রী। ওই নারী ডাক্তারের সাথে যা ঘটেছে, তা সমগ্র চিকিৎসক মহলকে আঘাত করেছে। শুধু তা-ই নয়, গোটা দেশে ভুল বার্তা যাচ্ছে।’

নীতীশের কাণ্ডে আরজেডি এবং কংগ্রেস কড়া সমালোচনা করেছে। তারা বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর মানসিক সুস্থতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। জম্মু-কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাও নীতীশকে দুষেছেন। অন্য দিকে, জেডিইউ বলছে, একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নিয়ে নীতীশকে দুষছেন সকলে। তাঁর গোটা রাজনৈতিক জীবনে নজর দিলেই দেখা যাবে, সংখ্যালঘু উন্নয়নে তিনি কী কী করেছেন। তিনি কারও ধর্মকে অসম্মান করবেন, এটা হতেই পারে না। নীতীশের দলের দাবি, সে দিন মুখ্যমন্ত্রী যা করেছেন সেটা পিতৃস্নেহের বশে করেছেন। ওই নারী চিকিৎসক তাঁর মেয়ের বয়সি। তাঁর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার সময় স্নেহের বশেই হিজাব খুলে দিয়েছিলেন। তা নিয়ে অহেতুক জলঘোলা হচ্ছে। যদিও বিতর্ক চলছেই।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা