যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে বিশ্ববাজারে বিপদে ভারত

দুবাই এয়ারশোতে বিভিন্ন দেশের অস্ত্র ক্রেতাদের সামনে বিধ্বস্ত হয়েছে ভারতীয় যুদ্ধবিমান তেজস। এটি আন্তর্জাতিক অস্ত্রক্রেতাদের নেতিবাচক বার্তা দিয়েছে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
তেজস যুদ্ধাস্ত্র
তেজস যুদ্ধাস্ত্র |সংগৃহীত

দুবাই এয়ারশোতে বিভিন্ন দেশের অস্ত্র ক্রেতাদের সামনে বিধ্বস্ত হয়েছে ভারতীয় যুদ্ধবিমান তেজস। এটি আন্তর্জাতিক অস্ত্রক্রেতাদের নেতিবাচক বার্তা দিয়েছে। এতে দেশটির যুদ্ধাস্ত্র রফতানির সম্ভাবনায় নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করা হয়েছে। সেখানে আরো বলা হয়েছে, দুবাই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম এয়ারশো। এ শোতে এমন দুর্ঘটনা বর্তমানে খুবই বিরল।

তবে এ বিষয়ে ভারতকে আশার বাণী শুনিয়েছেন মার্কিন বিশ্লেষক ডগলাস এ বার্কি। তিনি মনে করেন, এতে নেতিবাচক বার্তা গেলেও আশাহত হওয়ার মতো কিছু নেই। কারণ, এর আগে প্যারিস এয়ারশোতে রাশিয়ার সু-৩০ এবং মিগ-২৯ বিধ্বস্ত হয়েছিল। এরপরও এসব যুদ্ধবিমান বিভিন্ন দেশে রফতানি করতে পেরেছে রাশিয়া।

অবশ্য তিনি আশাবাদ জানিয়ে বলেছেন, নেতিবাচক প্রচারণার পরও তেজস আবার গতি ফিরে পাবে।

বিশ্লেষক ওয়াল্টার লাডউইগ মনে করেন, তেজসের আন্তর্জাতিক বিক্রি যতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ভবিষ্যৎ ভারতীয় যুদ্ধবিমান প্রকল্পের জন্য এটি যে শিল্প ও প্রযুক্তিগত ভিত্তি তৈরি করছে।

উল্লেখ্য, ১৯৮০-এর দশকে পুরনো মিগ-২১ প্রতিস্থাপনের লক্ষ্যে শুরু হওয়া তেজস প্রকল্পে ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ চলছে। রাষ্ট্রায়ত্ত হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড (হাল) ভারতের জন্য ১৮০টি উন্নত এমকে-১৪ ভ্যারিয়েন্ট তৈরির কথা রয়েছে। তবে জিই এরোস্পেসের ইঞ্জিন সরবরাহ সমস্যায় ডেলিভারি পিছিয়ে যাচ্ছে।

হালের সদ্য-অবসর নেয়া এক কর্মকর্তা জানান, এই দুর্ঘটনা কমপক্ষে আপাতত রফতানির সম্ভাবনা বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের লক্ষ্যবস্তু ছিল এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার কয়েকটি দেশ। মালয়েশিয়াতেও ২০২৩ সালে হালের অফিস খোলা হয়েছিল।

ভারতীয় বিমানবাহিনীতে বর্তমানে মাত্র ২৯ স্কোয়াড্রন রয়েছে। বাহিনীতে মোট অনুমোদিত সংখ্যা ৪২। এর মধ্যে মিগ-২৯, জাগুয়ার ও মিরাজ ২০০০-এর পুরনো সংস্করণগুলো আগামী বছরগুলোতে অবসরে যেতে যাচ্ছে।

ভারতীয় বিমানবাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, এগুলোর বিকল্প হিসেবে তেজসকে ধরা হয়েছিল, কিন্তু উৎপাদন সমস্যার কারণে তা সময়মতো পূরণ করতে পারছে না।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাৎক্ষণিক ঘাটতি পূরণে ভারত ফরাসি রাফাল, মার্কিন এফ-৩৫, অথবা রাশিয়ার সু-৫৭ কেনার বিষয় বিবেচনা করছে। তবে বর্তমানে বিমানবাহিনীর বহরে থাকা প্রায় ৪০টি তেজসের সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।

সূত্র : রয়টার্স