ভেঙে দেয়া সংসদ পুনর্বহালের দাবি নেপালের প্রধান দলগুলোর

সংসদ ভেঙে দেয়া ছিল ‘জেন জি’ আন্দোলনের অন্যতম দাবি। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, আগামী ৫ মার্চ ঘোষিত নতুন নির্বাচনের মতো আন্দোলনকারীদের দাবি জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই মোকাবেলা করা উচিত।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
সংগৃহীত

নেপালের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো দেশটির প্রেসিডেন্টের কাছে ভেঙে দেয়া সংসদ পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে। সম্প্রতি দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভের পর নেপালের প্রেসিডেন্ট সংসদ ভেঙে দেন। এক বিবৃতিতে দলগুলো জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পৌডেলের পার্লামেন্ট বিলুপ্ত ঘোষণা অসাংবিধানিক।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে দলগুলো এই দাবি জানিয়েছে। এতে নেপাল কংগ্রেস, সিপিএন-ইউএমএল, মাওয়িস্ট সেন্টারসহ মোট আটটি দলের প্রধান হুইপ সই করেছেন।

এর আগে, শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) নবনিযুক্ত অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কির সুপারিশে পৌডেল প্রতিনিধি পরিষদ ভেঙে দেন। আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবির মধ্যে এটি ছিল একটি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে গত সপ্তাহে শুরু হওয়া গণ-বিক্ষোভে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন। আন্দোলনকারীদের সাথে সমঝোতার পর অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কার্কিকে নিয়োগ দেয়া হয়।

এমন অবস্থায় শনিবারের বিবৃতিতে আটটি দল সংসদ পুনর্বহালের দাবি জানায়। তাদের অভিযোগ, প্রেসিডেন্টের পদক্ষেপ নেপালের আদালতের রায়ের দৃষ্টান্তেরও পরিপন্থী।

সংসদ ভেঙে দেয়া ছিল ‘জেন জি’ আন্দোলনের অন্যতম দাবি। তবে রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, আগামী ৫ মার্চ ঘোষিত নতুন নির্বাচনের মতো আন্দোলনকারীদের দাবি জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই মোকাবেলা করা উচিত।

এদিকে, শনিবার প্রেসিডেন্ট পৌডেল সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শন ও নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা করার আহ্বান জানান। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘খুব কঠিন ও ভীতিকর পরিস্থিতিতে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছানো হচ্ছে। সংবিধান টিকে আছে, সংসদীয় ব্যবস্থা টিকে আছে এবং গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র এখনো টিকে আছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে আরো দক্ষ গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।’

নেপালের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কার্কি শুক্রবার কাঠমান্ডুতে শপথ নেন। কয়েক দিনের মধ্যেই তার মন্ত্রিসভা গঠনের কথা রয়েছে। দুর্নীতিমুক্ত ভাবমূর্তির অধিকারী কার্কির নেতৃত্বকে জেন জি আন্দোলনের ছাত্রনেতারাও তাকে সমর্থন দিয়েছেন।

তবে তার মন্ত্রিসভাতে একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার, ভাঙচুর হওয়া সংসদ ও সরকারি ভবনগুলো পুনর্নির্মাণ, পরিবর্তনের দাবি নিয়ে রাস্তায় নামা তরুণদের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং গণতন্ত্র নিয়ে শঙ্কিত নাগরিকদের আশ্বস্ত করা। এর পাশাপাশি সহিংসতার দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করাও হবে অন্যতম দায়িত্ব।

সূত্র : বিবিসি