ভারতের বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টে একগুচ্ছ মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় এবার নিজেদের বক্তব্য জানিয়ে হলফনামা জমা দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। হলফনামাতে জানানো হয়েছে, ওয়াকফ আইনের কোনো বিধানের ওপর কোনো রকমের স্থগিতাদেশের বিরোধিতা করবে কেন্দ্র। কেন বিরোধিতা করা হবে তার যুক্তিও দেয়া হয়েছে হলফনামায়।
কেন্দ্রীয় সরকার আদালতে জানিয়েছে, সংসদের যৌথ কমিটির সুপারিশের পরই সংশোধিত ওয়াকফ আইন পাস করা হয়। ফলে এই স্থায়ী আইনের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করার ক্ষমতা নেই আদালতের। যদি সংসদে প্রণোদিত কোনো আইনের ওপর এভাবে স্থগিতাদেশ দেয়া হয়, তাহলে তা ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট করার সমতুল্য।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা তাদের অনলাইন প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ওয়াকফ আইন নিয়ে ‘ইচ্ছাকৃত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর বিবরণ’ দেয়া হচ্ছে বলে মনে করে কেন্দ্র।
হলফনামায় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে, এমন প্রচার করা হচ্ছে যেন ওয়াকফগুলোর সমর্থনে যাদের কোনো নথি নেই, তাদের ক্ষতি হবে। এই ধরনের প্রচার করা খুবই অন্যায়।
ওয়াকফ নিয়ে প্রথম থেকেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছেন বিরোধীরা। তবে বিরোধীদের আপত্তি উড়িয়ে কয়েক সপ্তাহ আগেই সংসদের দুই কক্ষেই ওয়াকফ বিল পাস হয়। পরে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাতে সই করার পর তা আইনে পরিণত হয়।
এরপরই মোদি সরকারের সংশোধিত ওয়াকফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে অন্তত ৭২টি মামলা হয়। বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিরোধী দলের সাংসদ, নেতারা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। সব মামলা একত্রিত করে শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চে।
গত ১৭ এপ্রিল এই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, ১৯৯৫ সালের আইনে নথিভুক্ত ওয়াকফ সম্পত্তিতে কোনো বদল ঘটানো যাবে না। নিয়োগ করা যাবে না ওয়াকফ বোর্ড বা পর্ষদেও। পাশাপাশি কেন্দ্রকে সাত দিনের মধ্যে নিজেদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশও দেয়া হয়। সেই মতো শুক্রবার কেন্দ্র প্রাথমিক হলফনামা জমা দেয় শীর্ষ আদালতে।