বিশ্ববরেণ্য মিসরীয় আলেম শায়খ আহমাদ ওমরের ইন্তেকাল

শায়খ আহমাদ ওমর হাশিমকে আধুনিক যুগে আল-আজহারের অন্যতম বিশিষ্ট আলেম হিসেবে গণ্য করা হত এবং তাকে বিবেচনা করা হত মহানবী সা:-এর সুন্নাহ ও ইসলামের মধ্যপন্থী দাওয়াহর অন্যতম প্রচারক হিসেবে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
শায়খ আহমাদ ওমর হাশিম
শায়খ আহমাদ ওমর হাশিম |সংগৃহীত

বিশ্বখ্যাত বিদ্যাপীঠ মিসরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদ সদস্য ও বরেণ্য আলেম শায়খ আহমাদ ওমর হাশিম ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) মিসরের রাজধানী কায়রোতে তিনি ইন্তেকাল করেন বলে আনাদোলু অ্যাজেন্সি নিশ্চিত করেছে।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। মৃত্যুর মাধ্যমে শায়খ আহমাদ হাশিমের ইলম, ফিকর ও দাওয়াতের দীর্ঘ কর্মময় ও সমৃদ্ধ জীবনের ইতি ঘটল।

স্থানীয় সময় জোহরের নামাজের পর জামে আজহারে শায়খের জানাজা নামাজ আদায়ের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপর নীল নদ সংলগ্ন আল-শারকিয়া গভর্নরেটের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করার কথা রয়েছে।

শায়খ আহমাদ ওমর হাশিমকে আধুনিক যুগে আল-আজহারের অন্যতম বিশিষ্ট আলেম হিসেবে গণ্য করা হত এবং তাকে বিবেচনা করা হত মহানবী সা:-এর সুন্নাহ ও ইসলামের মধ্যপন্থী দাওয়াহর অন্যতম প্রচারক হিসেবে।

কিংবদন্তি এই আলেম ১৯৪১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবেই আল-আজহারের ইলমি পরিবেশ লাভে ধন্য হন এবং ১৯৬১ সালে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘উসুলুদ দ্বীন’ অনুষদ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

এরপর তিনি হাদিস ও উলুমুল হাদীসে সম্মানসূচক স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৭৩ সালে একই কৃতিত্বের সাথে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।

কর্মজীবনে তিনি আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। এমনকি তিনি বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানটির ভিসি হওয়ার গৌরবও অর্জন করেন। সবশেষ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এখানকার সর্বোচ্চ উলামা পরিষদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এছাড়াও আরো গুরুত্বপূর্ণ একাধিক পদে তার দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে।

শায়খ আহমাদ হাশিম হাদীস, সুন্নাত, সীরাত, তাসাউফসহ বিভিন্ন বিষয়ে গবেষাণামূলক অন্তত ১২০টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। তিনি গবেষণাধর্মী ইলমি অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছেন।

মহান এই আলেমের ইন্তেকালে শোক প্রকাশ করেছেন আল-আজহার পড়ুয়া বিশ্বখ্যাত বাংলাদেশী ক্বারী শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আযহারী। তিনি বলেছেন, ‘শায়খ আহমাদ হাশিম ছিলেন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একজন ইসলামী স্কলার ও হাফেজে হাদীস। তার আলোচনা এবং দারসে বসার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ছুটে গিয়েছি। শায়খ হাশিমের আলোচনা শুনে মিসরীদের চোখে পানি দেখেছি আমি।’ আখিরাতে প্রিয় শায়খের সুউচ্চ মর্যাদার জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আযহারী।