সুয়েইদায় বিচারবহির্ভূত হত্যার তদন্ত শুরু করেছে সিরিয়া

সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সুয়েইদায় সামরিক পোশাক পরা একটি অজ্ঞাত গোষ্ঠীর সংঘটিত ‘গুরুতর ও ভয়াবহ’ অপরাধের অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
সংগৃহীত

সিরিয়ায় দ্রুজ অধ্যুষিত সুয়েইদা অঞ্চলে এক সপ্তাহ ধরে চলা সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার দেশটির সরকার এই তথ্য জানিয়েছে।

দামেস্ক থেকে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ১৩ জুলাই শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ গত সপ্তাহের শেষে একটি যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে শেষ হয়। প্রথমে দ্রুজ যোদ্ধা ও বেদুইন গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলেও পরে তা রক্তক্ষয়ী সংঘাতে রূপ নেয়। এই সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজার ৩০০ জনের বেশি। নিহতদের অধিকাংশই দ্রুজ সম্প্রদায়ের।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের তথ্যমতে, নিহতদের মধ্যে ৫৩৩ জন দ্রুজ যোদ্ধা এবং ৩০০ জন বেসামরিক দ্রুজ রয়েছে। এর মধ্যে ১৯৬ জনকে দেশটির প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদস্যরা সরাসরি গুলি করে হত্যা করেছে বলে জানানো হয়।

এছাড়া সংঘাতে ৪২৩ জন সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং ৩৫ জন বেদুইন সুন্নি নিহত হন। নিহত বেদুইনদের মধ্যে তিনজন বেসামরিক ব্যক্তি, যাদের দ্রুজ যোদ্ধারা বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করেছে বলে অবজারভেটরি জানায়। দ্রুজদের সমর্থনে ইসরাইলি বিমান হামলায় ১৫ জন সরকারি সেনা নিহত হয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সুয়েইদায় সামরিক পোশাক পরা একটি অজ্ঞাত গোষ্ঠীর সংঘটিত ‘গুরুতর ও ভয়াবহ’ অপরাধের অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে, যা সংশ্লিষ্টদের পরিচয় ও ঘটনার পিছনের কারণ খতিয়ে দেখবে।

মন্ত্রণালয়টি আরো জানায়, ‘বহিরাগত কিছু গোষ্ঠী সুয়েইদায় উপস্থিত ছিল এবং প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে।’

দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মুরহাফ আবু কাসরা বলেছেন, ‘অপরাধে জড়িত যেকোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে, এমনকি তারা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথেও যুক্ত থাকলেও ছাড় পাবে না।’

মঙ্গলবারই আরেক তদন্ত কমিটি মার্চ মাসে আলাওয়ি সম্প্রদায়ের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সংঘটিত হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়, ঘটনাগুলোর সাথে কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য জড়িত ছিল বলে শনাক্ত করা গেছে।

গত রোববার থেকে সুয়েইদায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এরপর বেদুইন ও উপজাতি যোদ্ধারা শহর ছেড়ে চলে গেলে দ্রুজ যোদ্ধারা পুনরায় নিয়ন্ত্রণ নেয়। পাশাপাশি সরকারি বাহিনী প্রদেশের কিছু অংশে অবস্থান নেয়।

সূত্র : বাসস