ফিলিস্তিনি মুক্তিকামী আন্দোলন হামাস শুক্রবার রাতে ইসরাইলের কাছে আরো এক পণবন্দীর লাশ হস্তান্তর করেছে। দু’বছরের যুদ্ধের পর গাজার ধ্বংসাবশেষের নিচে এখনো নিখোঁজ থাকা সমস্ত মৃত বন্দীকে ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকায় হামাস এই পণবন্দীর লাশ হস্তান্তর করল।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘রেডক্রসের মাধ্যমে ইসরাইল একজন মৃত পনবন্দীর কফিন পেয়েছে। ওই মৃত বন্দীকে গাজায় তাদের নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে এবং ইসরাইলের একটি চিকিৎসা বিশ্লেষণ কেন্দ্রে তার পরিচয় শনাক্ত করা হবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায়, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী শুক্রবার রাতে হস্তান্তরিত লাশ বাদ দিয়ে, জীবিত ২০ জন পণবন্দীকেকে এবং ২৮ জন নিহত ব্যক্তির মধ্যে নয়জনের লাশ ফেরত দিয়েছে।
বিনিময়ে ইসরাইল তার কারাগার থেকে প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে এবং ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজায় শুরু হওয়া সামরিক অভিযান বন্ধ রয়েছে।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার ‘সকল পণবন্দীকে ফিরিয়ে আনার’ দৃঢ় সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছেন। ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী সতর্ক করে বলেছেন, হামাস যদি তা করতে ব্যর্থ হয় তবে সামরিক বাহিনী পুনরায় যুদ্ধ শুরু করবে।
হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা গাজী হামাদ শুক্রবার এই হুমকিগুলোকে ‘অগ্রহণযোগ্য চাপ কৌশল’ বলে অভিহিত করেছেন।
হামাদ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘লাশের বিষয়টি জটিল এবং সময়ের প্রয়োজন, বিশেষ করে দখলদারিত্ব গাজার ভূদৃশ্য বদলে দেয়ার পর।’
তিনি বলেন, ‘আমরা লাশ ফেরত দেবো এবং প্রতিশ্রুতি অনুসারে চুক্তি মেনে চলব।’
ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া লাশ উদ্ধারে সহায়তা করার জন্য তুরস্ক বিশেষজ্ঞদের একটি দল পাঠিয়েছে। কিন্তু দলটি শুক্রবারও ইসরাইলি ভূখণ্ডে প্রবেশের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করছে।
একজন তুর্কি কর্মকর্তা বলেন, ‘ইসরাইল কখন তুর্কি দলকে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।’ তিনি উল্লেখ করেন, দলের মিশনে ফিলিস্তিনি এবং পণবন্দীদের লাশ- উভয়কেই খুঁজে বের করাই উদ্দেশ্য।
হামাসের একটি সূত্র জানিয়েছে, তুর্কি প্রতিনিধিদল রোববারের মধ্যে প্রবেশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা উদ্ধারকারী বাহিনী বলেছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ধ্বংসস্তূপ থেকে ২৮০টিরও বেশি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
সূত্র : বাসস