গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য আগামীকাল সোমবার মিসরের শারম-আল শেখে একটি আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি।
শনিবার (১১ অক্টোবর) মিসরের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শীর্ষ সম্মেলনে ২০টিরও বেশি দেশের নেতারা অংশগ্রহণ করবেন। এর লক্ষ্য হবে ‘গাজা উপত্যকায় যুদ্ধের অবসান, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনের প্রচেষ্টা জোরদার করা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার একটি নতুন যুগের সূচনা করা’।
এতে জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ও স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ যোগ দেবেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও তার উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন। তবে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, অথবা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের কোনো প্রতিনিধি এতে যোগ দেবেন কি-না তা এখনো জানা যায়নি।
এই ঘোষণাটি এমন সময়ে এসেছে, যখন ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর হাজার হাজার ফিলিস্তিনি গাজার উত্তরে তাদের ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়িঘরে ফিরে আসছেন।
গাজার বিরুদ্ধে ইসরাইলি যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত একটি চুক্তির প্রথম ধাপ অনুযায়ী ইসরাইলি সেনারা আংশিকভাবে পিছু হটেছে। ইসরাইলের যুদ্ধে গাজায় এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং দুর্ভিক্ষপীড়িত অঞ্চলটির বেশিভাগ অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ফিলিস্তিনিদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পাঁচ হাজার অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এর মধ্যে গাজা সিভিল ডিফেন্স, পুলিশ ও পৌরসভার দলগুলো লাশ উদ্ধার, ধ্বংসস্তূপ অপসারণ করার জন্য ৮৫০টিরও বেশি উদ্ধার ও ত্রাণ অভিযান পরিচালনা করেছে।
শুক্রবার সকাল থেকে গাজার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ১৫০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিভিল ডিফেন্স। সংস্থাটি জানিয়েছে, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন লাইন পুনরুদ্ধারের জন্য ৯০০ টিরও বেশি পরিষেবা মিশনও সম্পন্ন করা হয়েছে। পৃথকভাবে, নাসের হাসপাতাল জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস থেকে আরো ২৮টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
গাজায় ইসরাইলের অবরোধের কারণে জ্বালানি ও সরঞ্জামের প্রবেশ সীমিত থাকায় এই অভিযানগুলো অল্প সংখ্যক সরঞ্জাম দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। ইসরাইলি হামলায় অ্যাম্বুলেন্স, অগ্নিনির্বাপক গাড়ি ও বেসামরিক প্রতিরক্ষা কেন্দ্র ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ফলে গাজাজুড়ে জরুরি অবস্থা ও পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে।
সূত্র : আল জাজিরা