গাজায় ইসরাইলের সহযোগীদের কঠিন বিচারের মুখোমুখি করার হুমকি দিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। সংগঠনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, গাজায় ইসরাইলের সহযোগী, যুদ্ধবাজ ও সংগঠিত গ্যাং এবং দখলদারদের এজেন্টদের একটি ‘কালো তালিকা’ প্রস্তুত করা হয়েছে। এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের পক্ষ থেকে এই গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা বার্তা সামনে এসেছে। আল জাজিরাতে পাঠানো এক বিবৃতিতে ওই বার্তা পাঠানো হয়।
সূত্রটি বলেছে, তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের উপর নজর রাখা হচ্ছে এবং উপযুক্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেই তাদের বিপ্লবী আদালতের মাধ্যমে বিচার করা হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘যদি এই ব্যক্তিরা জনগণের পাশে ফিরে না আসে এবং তাদের অপরাধের জন্য অনুতপ্ত না হয়, তাহলে তালিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত থেকে রেহাই নেই।’
হামাসের পক্ষ থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, শত্রুর সাথে সম্পর্কযুক্ত এই ব্যক্তি ও গোষ্ঠীগুলোর উপস্থিতি গাজার অভ্যন্তরে নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে। সূত্রটি সতর্ক করেছে যে ‘আমরা সন্দেহভাজনদের সতর্ক করছি। তারা শিগগিরই বা পরে প্রতিরোধের ন্যায়বিচার এবং তরবারির মুখোমুখি হবে।’
এই প্রেক্ষাপটে হামাসের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা দাবি করেছেন, গাজার সাহায্য কেন্দ্রগুলো কখনো কখনো দখলদারদের সহযোগীদের নিয়োগ ও গোপন সাক্ষাৎস্থল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেইসাথে, তরুণদের মধ্যে মাদক ছড়িয়ে দিয়ে তাদের ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার সাথে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে।
ইসরাইলি সংবাদপত্র ইয়েদিওথ আহরোনোথ জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজার রাফায় ইয়াসের আবু শাবাবের নেতৃত্বাধীন একটি গ্যাং সক্রিয় রয়েছে, যেটি হামাসের বিরুদ্ধেও কাজ করছে। এছাড়া গাজার উত্তর ও দক্ষিণ অংশে আরো কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের প্রতিরোধ কাঠামোর বিরুদ্ধে তৎপর রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইয়েদিওথ আহরোনোথ দাবি করেছে যে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেট সম্প্রতি গোপনে গাজায় একটি ‘ফিলিস্তিনি মিলিশিয়া’ গঠনের জন্য অস্ত্র সরবরাহ করেছে। এই অভিযানের অনুমোদন ছিল সরাসরি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু থেকে।
অন্যদিকে, গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিপ্লবী আদালত দক্ষিণ গাজায় মিলিশিয়া পরিচালনার অভিযোগে অভিযুক্ত ইয়াসের আবু শাবাবকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে। ১৯৬০ সালের ফিলিস্তিনি দণ্ডবিধি এবং ১৯৭৯ সালের বিপ্লবী কার্যবিধি আইনের আওতায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আদালতের বিবৃতিতে জানানো হয়, আবু শাবাব আত্মসমর্পণ না করলে তাকে ‘ন্যায়বিচার থেকে পলাতক’ হিসেবে বিবেচনা করে অনুপস্থিতিতেই বিচার চলবে।
পরিস্থিতির মধ্যেই আবু শাবাব সম্প্রতি দ্য সানডে টাইমস-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজেকে ইসরাইলের সহযোগী বলে অস্বীকার করেন। তিনি জাতিসঙ্ঘের সাহায্য লুটের অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি দাবি করেন, হামাস যুদ্ধবিরতিকে ব্যবহার করে প্রতিপক্ষকে নির্মূল করতে চায়। এজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে নিরাপত্তাও চান তিনি।
উল্লেখ্য, আবু শাবাব অতীতে মাদক পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন এবং ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরুর আগ পর্যন্ত কারাগারে ছিলেন।
সূত্র : আল জাজিরা



