পারমাণবিক শক্তি কিংবা মানবাধিকার অজুহাতমাত্র, আমেরিকা ইরানের সক্ষমতায় অসন্তুষ্ট : খামেনী

সর্বোচ্চ নেতা ইসলামী প্রজাতন্ত্রের ভিত্তির অনন্য দৃঢ়তাকে সাম্প্রতিক যুদ্ধের আরেকটি দিক বলে মনে করেন।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
খামেনি
খামেনি |সংগৃহীত

বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, আমেরিকা নেতৃত্বাধীন বিশ্ব বলদর্পী শক্তিগুলো ইসলামি প্রজাতন্ত্রের বিরোধিতা করার মূল কারণ হলো ধর্ম, জ্ঞান এবং কুরআন ও ইসলামের ছায়ায় ইরানিদের ঐক্য।

১২ দিনের যুদ্ধে শহীদদের চেহলাম উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

সাম্প্রতিক যুদ্ধে শহীদ হওয়া সামরিক কমান্ডার, বিজ্ঞানী এবং তাদের জীবিত স্বজনদের প্রতি নতুন করে সমবেদনা প্রকাশ করে আয়াতুল্লাহ খামেনী বলেন, এই ১২ দিনে অর্জিত মহান সম্মান ইরানের গর্ব। তার পাশাপাশি আজ সমগ্র বিশ্ব স্বীকার করে, ইরানি জাতি বিশ্বকে তার শক্তি, ধৈর্য, দৃঢ় সংকল্প এবং ইচ্ছাশক্তি দেখাতে সক্ষম হয়েছে। কাজেই বিশ্ব এখন সরাসরি ইসলামী প্রজাতন্ত্রের শক্তি অনুভব করতে পারে।

সর্বোচ্চ নেতা ইসলামী প্রজাতন্ত্রের ভিত্তির অনন্য দৃঢ়তাকে সাম্প্রতিক যুদ্ধের আরেকটি দিক বলে মনে করেন। তিনি বলেন, এই ঘটনাগুলো আমাদের জন্য অভূতপূর্ব ছিল না এবং গত ৪৬ বছরে, আট বছরের চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধের পাশাপাশি ইসলামী প্রজাতন্ত্র বারবার অভ্যুত্থান, বিভিন্ন সামরিক, রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তা বিদ্রোহের মুখোমুখি হয়েছে। এমনকি দুর্বল মনোবলের অধিকারী উপাদানগুলোকেও জাতির বিরুদ্ধে কাজ করতে বাধ্য করার মতো ঘটনার সম্মুখিন হয়েছে। তারপরও শত্রুর সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়ে গেছে।

বিপ্লবের নেতা ‘ধর্ম’ এবং ‘জ্ঞান’ এই দু’টি ভিত্তির ওপর ইসলামী প্রজাতন্ত্রের ভিত্তি বলে উল্লেখ করে বলেন, ইরানের জনগণ এবং যুবসমাজ, এই দু’টি ভিত্তির ওপর নির্ভর করে, শত্রুকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিছু হটতে বাধ্য করেছে এবং তারা এখন থেকে তা অব্যাহত রাখবে।

তিনি বলেন, মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিশ্ব বলদর্পী শক্তিগুলো যে ইরানের বিরোধিতা করছে তার কারণ হলো ধর্ম ও জ্ঞান এবং কুরআন ও ইসলামের ছায়ায় ইরানিদের ঐক্য। কিন্তু তারা যে পারমাণবিক সমৃদ্ধি ও মানবাধিকারের ধুয়া তুলছে সেগুলো অজুহাতমাত্র। তাদের অস্বস্তি ও বিরোধিতার প্রধান কারণ হলো নতুন আদর্শের উত্থান এবং বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রসহ মানবিক, কারিগরি ও ধর্মীয় বিজ্ঞানে ইসলামী প্রজাতন্ত্রের সক্ষমতা।

আল্লাহর সাহায্যে ইরানি জাতি তার ধর্ম ও জ্ঞান ত্যাগ করবে না বলে জোর দিয়ে আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী আরো বলেন, আমরা আমাদের ধর্মকে শক্তিশালী করার এবং আমাদের বিভিন্ন বিজ্ঞানের প্রসারের জন্য বৃহৎ পদক্ষেপ নেব এবং শত্রুর অন্ধত্বের মধ্য দিয়ে আমরা ইরানকে অগ্রগতি ও সম্মানের শীর্ষে নিয়ে যেতে সক্ষম হব।

পথে অবিচল থাকা, সত্যের পথে এগিয়ে যাওয়া, কুরআন তেলাওয়াত করা এবং তার উপর আমল করা, ফরজ কর্তব্য পালন করা, ঐশী ঐতিহ্য পুনরুজ্জীবিত করা, বিদআতের মুখোমুখি হওয়া, জিহাদে অংশগ্রহণ করা এবং নেতৃত্বের অনুসরণ করা - এই আটটি বৈশিষ্ট্যের দিকে ইঙ্গিত করে হুজ্জাতুল ইসলাম রাফিঈ বলেন, কুরআন অনুসারে ঈমান এবং আস্থা হল ঐশী বিজয়ের দু’টি প্রধান কারণ। এই দু’টি উপাদান ১২ দিনের আরোপিত যুদ্ধে স্পষ্টভাবে উপস্থিত ছিল এবং ইরানী জাতির প্রতিরোধ ও বিজয়ের পথ প্রশস্ত করেছিল।

সূত্র : পার্সটুডে