দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা জানিয়েছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরাইলের বিরুদ্ধে করা তার দেশের গণহত্যার মামলায় কোনো প্রভাব পড়বে না।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) কেপটাউনে পার্লামেন্টে রামাফোসা এই বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, অবরুদ্ধ ভূখণ্ডে ইসরাইলের যুদ্ধের অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও দক্ষিণ আফ্রিকা ২০২৩ সালের মামলা চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় সংকল্প বজায় রেখেছে।
রামাফোসা সংসদে বলেন, ‘যে শান্তি চুক্তি হয়েছে, সেটিকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে বিচারাধীন মামলার ওপর তার কোনো প্রভাব পড়বে না।’
দক্ষিণ আফ্রিকা ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে গাজায় গণহত্যার জন্য ইসরাইলের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করে। ২০২৪ সালের অক্টোবরে দেশটি ৫০০ পৃষ্ঠার একটি বিস্তারিত আবেদন দাখিল করে। ইসরাইলের পাল্টা যুক্তি জমা দেয়ার শেষ সময় ২০২৬ সালের ১২ জানুয়ারি। ২০২৭ সালে মৌখিক শুনানি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২৭ সালের শেষ দিকে বা ২০২৮ সালের শুরুতে চূড়ান্ত রায় প্রকাশ করা হতে পারে।
আইসিজে তিনটি অস্থায়ী ব্যবস্থা জারি করেছে এবং ইসরাইলকে গণহত্যা বন্ধ করতে ও গাজায় মানবিক সাহায্য প্রবেশের অনুমতি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তবে ইসরাইল তা মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
রামাফোসার ঘোষণা নিয়ে জাতিসঙ্ঘের স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার ফ্রান্সেসকা আলবানিজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট দিয়ে বলেন, ‘ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা, ক্ষতিপূরণ ও পুনরাবৃত্তি রোধের নিশ্চয়তা ছাড়া কোনো শান্তি টেকসই নয়।’
ইসরাইলের কট্টর সমালোচক স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ স্প্যানিশ রেডিওতে বলেন, যুদ্ধবিরতির মানে ইসরাইলের দায়মুক্তি না। এখানে দায়মুক্তির সুযোগ নেই। গণহত্যার পেছনে যারা রয়েছেন তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন ইসরাইলকে গাজায় গণহত্যা চালানোর জন্য অভিযুক্ত করেছে। জাতিসঙ্ঘের একটি তদন্ত কমিশন ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে বলেছে, ইসরাইল গাজায় গণহত্যা চালিয়েছে।
সূত্র : আল জাজিরা