গাজা নিয়ে মিসর, কাতার, তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ বিবৃতি

এই বিবৃতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক বিরল স্বীকৃতি যেখানে বলা হয়, ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলিরা সমান অধিকারের যোগ্য।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প |সংগৃহীত

মিসর, কাতার, তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতারা গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে সমর্থন করে এবং এই অঞ্চলে ‘স্থায়ী শান্তি’ প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছেন।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) মিসরের শারম আল-শেখে আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলনের পর বিবৃতিটি প্রকাশিত হয়। এই বিবৃতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক বিরল স্বীকৃতি যেখানে বলা হয়, ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলিরা সমান অধিকারের যোগ্য।

এতে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান ও মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। ফিলিস্তিন ও ইসরাইল এই ঘোষণার বিষয়বস্তু হলে এই দুই দেশ এতে অংশ নেয়নি।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা ট্রাম্প শান্তি চুক্তির সব পক্ষের সত্যিকারের ঐতিহাসিক প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবায়নকে স্বাগত জানাই। যা দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা দুর্ভোগ ও ক্ষয়ক্ষতির অবসান ঘটাবে এবং আশা, নিরাপত্তা, শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য একটি ভাগ করা দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে এই অঞ্চলের জন্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।’

এতে বলা হয়, ‘গাজায় যুদ্ধের অবসান ঘটাতে এবং মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আন্তরিক প্রচেষ্টাকে আমরা সমর্থন করি। আমরা একসাথে এই চুক্তিটি এমনভাবে বাস্তবায়ন করব যা ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলি উভয় অঞ্চলের সব মানুষের জন্য শান্তি, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও সুযোগ নিশ্চিত করবে।’

এতে আরো বলা হয়, ‘স্থায়ী শান্তি এমনভাবে হবে যেখানে ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলি উভয়ই তাদের মৌলিক মানবাধিকার সুরক্ষিত, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং তাদের মর্যাদা সমুন্নত রেখে উন্নতি করতে পারবে। আমরা নিশ্চিত করছি যে সহযোগিতা ও টেকসই সংলাপের মাধ্যমে অর্থপূর্ণ অগ্রগতি অর্জিত হবে এবং জাতি ও জনগণের মধ্যে বন্ধন জোরদার করা আঞ্চলিক ও বিশ্বব্যাপী শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্থায়ী স্বার্থে কাজ করবে।’

কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিবৃতি বলা হয়, ‘আমরা ভবিষ্যতের বিরোধগুলো বলপ্রয়োগ বা দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের পরিবর্তে কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা স্বীকার করি যে মধ্যপ্রাচ্য দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ, স্থবির আলোচনা, অথবা সফল আলোচনার শর্তাবলীর অসম্পূর্ণ প্রয়োগের ধারাবাহিক চক্র চলতে পারে না। গত দুই বছরে বেদনাদায়ক ঘটনাগুলো একটি জরুরি স্মারক হিসেবে কাজ করবে যে ভবিষ্যত প্রজন্ম অতীতের ব্যর্থতার চেয়ে আরো ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য।’

এই ঘোষণাপত্রে সংঘাতের কারণ হিসেবে ফিলিস্তিনিদের ওপর আঙুল তোলা হয়নি, যেভাবে মার্কিন প্রশাসনগুলো করেছে। এটি গাজার সংগ্রামকে বৃহত্তর ফিলিস্তিনি প্রশ্নের অংশ হিসেবে পুনর্বিন্যাস করেছে। তবে, যৌথ বিবৃতিতে ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্র এবং তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার স্পষ্টভাবে স্বীকার করা হয়নি।

সূত্র : আল জাজিরা