ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রচণ্ড ঠান্ডায় জমে এক ফিলিস্তিনি শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে, প্রচণ্ড শীতের মধ্যেও ইসরাইল গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দুই সপ্তাহ বয়সী শিশু মোহাম্মদ খলিল আবু আল-খাইর গাজায় তীব্র ঠান্ডার কারণে সৃষ্ট হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সোমবার মারা গেছে।
গাজা সিটি থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আযম জানান, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের যুদ্ধের কারণে গাজার মৌলিক সুরক্ষা ব্যবস্থা পরিকল্পিতভাবে ভেঙে ফেলায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে
তিনি আরো বলেন, ‘পরিবারগুলো ভেজা মাটিতে তাঁবু টানিয়ে বাস করছে, সেখানে উত্তাপ নেয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই, বিদ্যুৎ নেই, পর্যাপ্ত পোশাক নেই। যখন খাদ্য, জ্বালানি, আশ্রয় ও সাহায্য নিষিদ্ধ করা হয়, তখন ঠান্ডা এভাবেই প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে।‘
ইসরাইলের দুই বছরের যুদ্ধে গাজার ৮০ শতাংশেরও বেশি কাঠামো ধ্বংস হয়েছে। লাখ লাখ পরিবার নড়বড়ে তাঁবু বা জনাকীর্ণ অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।
সম্প্রতি গাজায় প্রবল ঝড়ে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। প্রবল বৃষ্টিপাত ও প্রচণ্ড বাতাসে তাঁবুগুলো প্লাবিত হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো ধসে পড়েছে।
বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি উম্মে মোহাম্মদ আসালিয়া বলেন, ‘আমরা আগুনের ওপর শিশুদের কাপড় শুকানোর চেষ্টা করছি। ওদের জন্য অতিরিক্ত কাপড় নেই। আমি ভীষণ ক্লান্ত। আমাদের যে তাঁবু দেয়া হয়েছিল তা শীতের জন্য উপযুক্ত নয়। আমাদের কম্বল দরকার।‘
কিন্তু জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ বলছে, ইসরাইলি সরকার গাজায় সরাসরি সাহায্য আনতে বাধা দিয়েছে।
মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া এক বার্তায় সংস্থাটি জানায়, পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছিল এমন ক্ষতিগ্রস্ত ভবন ধসে মানুষ মারা গেছে। ঠান্ডার কারণে শিশুরাও মারা গেছে বলে জানা গেছে। এখনই ব্যাপকভাবে সহায়তা পৌঁছাতে হবে গাজায়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ১১ অক্টোবর যুদ্ধবিরতির পর থেকে গাজায় ইসরাইলি হামলায় অন্তত ৩৯৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং এক হাজার ৭৪ জন আহত হয়েছেন।
সূত্র: আল জাজিরা



