গাজায় বিতর্কিত ত্রাণ সংস্থা জিএইচএফের কার্যক্রম শেষ করার ঘোষণা

বিবৃতিতে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে অক্টোবরে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির শর্তগুলোকে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
গাজায় জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে ফিলিস্তিনিরা
গাজায় জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে ফিলিস্তিনিরা |সংগৃহীত

ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত বিতর্কিত ত্রাণ বিতরণ সংস্থা জিএইচএফ গাজায় তাদের ‘মিশন‘ শেষ করার ঘোষণা দিয়েছে। চলতি বছরের মে মাসে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় ত্রাণ বিতরণ শুরু করার পর সংস্থাটি বিতর্কের জন্ম দেয়।

গাজায় জাতিসঙ্ঘ ও বিদ্যমান অন্যান্য মানবিক সহায়তা কাঠামোকে এড়িয়ে সরাসরি খাদ্য বিতরণ এবং সংস্থাটির ত্রাণ কেন্দ্রগুলোতে নিয়মিতই ভিড় ও বিশৃঙ্খলার মধ্যে ইসরাইলি সেনা ও নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে ফিলিস্তিনিদের হতাহতের ঘটনায় জিএইচএফের ব্যাপক নিন্দার সম্মুখীন হয়।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) জিএইচএফের নির্বাহী পরিচালক জন অ্যাক্রি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘শুরু থেকেই জিএইচএফের লক্ষ্য ছিল একটি জরুরি প্রয়োজন পূরণ করা, প্রমাণ করা যে অন্যরা যেখানে ব্যর্থ হয়েছে সেখানে একটি নতুন পদ্ধতি সফল হতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত সেই সাফল্য বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে হস্তান্তর করা।‘

বিবৃতিতে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে অক্টোবরে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির শর্তগুলোকে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। শর্তগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত বেসামরিক-সামরিক সমন্বয় কেন্দ্র তৈরি করা, যা গাজায় সাহায্যের সমন্বয় সাধনের জন্য তৈরি করা হয়েছে এবং জাতিসঙ্ঘ-সমর্থিত সাহায্য বিতরণ প্রচেষ্টা আংশিকভাবে পুনরায় শুরু করার অনুমতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘ফলস্বরূপ, আমরা আমাদের কার্যক্রম বন্ধ করছি। কারণ আমরা গাজাবাসীদের কাছে সাহায্য পৌঁছে দেয়ার আরো ভালো উপায় দেখানোর লক্ষ্যে সফল হয়েছি।‘

সংস্থাটি দাবি করে, তারাই একমাত্র ত্রাণ সংস্থা যা কোনো বিকল্প ছাড়াই নির্ভরযোগ্যভাবে ও নিরাপদে গাজার ফিলিস্তিনিদের সরাসরি বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ করে।

তবে জিএইচএফের এই দাবি আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোর বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিপরীত। আগস্ট মাসে ২৮ জন জাতিসঙ্ঘ বিশেষজ্ঞ জিএইচএফ ভেঙে দেয়ার আবেদন করেছিলেন। তারা এই প্রকল্পটিকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন করে গোপন সামরিক ও ভূ-রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডার জন্য মানবিক ত্রাণ কিভাবে ব্যবহার করা হয় তার একটি ভয়াবহ উদাহরণ‘ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।

সে সময়ে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন, মে মাসের শেষের দিকে তাদের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে জিএইচএফের কেন্দ্রগুলোর আশপাশে ইসরাইলি বাহিনী ও নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে কমপক্ষে ৮৫৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

সূত্র : আল জাজিরা