ইসরাইলি পার্লামেন্টে ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে ‘সন্ত্রাসবাদে মৃত্যুদণ্ড’ বিল পাস

বাস্তবে এই আইন কেবলমাত্র সেই ফিলিস্তিনিদের ওপর প্রযোজ্য হবে, যারা ইসরাইলি নাগরিক হত্যা করেছেন। কিন্তু ইসরাইলি উগ্রপন্থীরা যদি ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালান, তাদের ক্ষেত্রে এ আইন প্রযোজ্য হবে না।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
ইসরাইলের কট্টরপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভিরের
ইসরাইলের কট্টরপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভিরের |সংগৃহীত

ইসরাইলের পার্লামেন্টে ‘সন্ত্রাসবাদের’ জন্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে একটি বিতর্কিত বিল প্রথম দফার ভোটে পাস হয়েছে। সোমবার ১২০ সদস্যের নেসেটে ইসরাইলের কট্টরপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভিরের প্রস্তাবিত এ দণ্ডবিধির সংশোধনী ৩৯-১৬ ভোটে গৃহীত হয়েছে। এতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের সমর্থন রয়েছে বলে ইঙ্গিত দেয়।

টাইমস অফ ইসরাইল জানিয়েছে, প্রস্তাবিত আইনের খসড়া অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ড সেই ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে যারা ‘জাতিগত বিদ্বেষ’ নিয়ে ইসরাইলিদের হত্যা করবে এবং ’ইসরাইল রাষ্ট্রের ক্ষতি করার ও ইহুদি জাতির নিজ ভূমিতে পুনর্জাগরণে আঘাত করার উদ্দেশ্য’ কাজ করবে।

তবে সমালোচকরা বলছেন, সহজ ভাষায় বলতে গেলে, বাস্তবে এই আইন কেবলমাত্র সেই ফিলিস্তিনিদের ওপর প্রযোজ্য হবে, যারা ইসরাইলি নাগরিক হত্যা করেছেন। কিন্তু ইসরাইলি উগ্রপন্থীরা যদি ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালান, তাদের ক্ষেত্রে এ আইন প্রযোজ্য হবে না।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে। সংস্থাটির গবেষণা, নীতি ও প্রচারবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক এরিকা গুয়েভারা রোসাস বলেছেন, ‘এতে কোনো সন্দেহ নেই, ইসরাইলি নেসেটের ৩৯ জন সদস্য প্রথম দফায় একটি বিল অনুমোদন করেছে যা কার্যকরভাবে আদালতকে কেবল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড আরোপের নির্দেশ দেয়।’

গুয়েভারা রোজাস ব্যাখ্যা করেন, ‘রাষ্ট্রীয় মদদে হত্যা, প্রভাব বিস্তার ও নির্যাতনের জন্য বৈষম্যমূলক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা তো দূরের কথা, কোনো পরিস্থিতিতেই মৃত্যুদণ্ড আরোপ করা উচিত নয়।’

অ্যামনেস্টির এই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইসরাইলি পার্লামেন্টের পদক্ষেপকে ‘একটি বিপজ্জনক ও নাটকীয় পদক্ষেপ এবং গাজায় ইসরাইলের বর্ণবাদ ব্যবস্থা ও গণহত্যার জন্য চলমান দায়মুক্তির ফসল’ হিসেবেও বর্ণনা করেছেন।

অতীতেও অনুরূপ আইন প্রণয়নের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার আগে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় পাস হতে হবে। বেন-গভির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভোটের ফলাফলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, তার দল ‘ইতিহাস তৈরি করছে’।

সূত্র : আল জাজিরা