জাতিসংঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) কাতারে ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলার নিন্দা জানিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার আহ্বান জানিয়েছে। তবে বিবৃতিতে ইসরাইলের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
জাতিসঙ্ঘ সদর দফতর থেকে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদ পরিস্থিতি শান্ত করার ওপর জোর দিচ্ছে এবং কাতারের প্রতি তাদের সংহতি প্রকাশ করেছে। ইসরাইলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ নিরাপত্তা পরিষদের ১৫টি দেশের সম্মতিতেই বিবৃতিটি গৃহীত হয়।
বিবৃতিতে পরিষদের সদস্যরা জানিয়েছে, তারা কাতারের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানাচ্ছে।
এর আগে, মঙ্গলবার ইসরাইল হামাসের শীর্ষ নেতাদের লক্ষ্য করে কাতারের রাজধানী দোহায় একটি নজিরবিহীন হামলা চালায়। হামলায় হামাসের শীর্ষ নেতারা বেঁচে গেলেও তাদের পাঁচ সদস্য ও কাতারের একজন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য নিহত হন।
নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতিতে দোহাকে ‘একটি গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী দেশ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি কাতারও ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে শান্তি আলোচনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘হামাসের হাতে আটক ইসরাইলি পণবন্দীদের মুক্ত করা, নিহতদের লাশ ফেরত পাওয়া এবং গাজায় যুদ্ধ ও দুর্দশা বন্ধ করাই আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার।’
জরুরি বৈঠকে যোগ দিতে নিউইয়র্কে রয়েছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান আল-থানি। তিনি নিরাপত্তা পরিষদের এই সমর্থনমূলক বিবৃতিকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, তার দেশ মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, ‘রক্তপাত বন্ধে আমরা মানবিক ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। তবে সার্বভৌমত্বে কোনো আঘাত মেনে নেয়া হবে না। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী যেসব ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার আমাদের আছে, আমরা তা প্রয়োগ করব।’
তিনি ইসরাইলের নেতাদের ‘রক্তপিপাসু চরমপন্থী’ বলেও অভিহিত করেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরাইল পাল্টা হামলা শুরু করে। তখন থেকে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ এ বিষয়টি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চাইলেও যুক্তরাষ্ট্রের একের পর এক ভেটো দেয়ায় পরিষদ কিছুই করতে পারেনি।
তবে ইসরাইলের প্রতি সমর্থন থাকা সত্ত্বেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার দোহায় চালানো হামলায় ‘খুশি নন’ বলে জানান। এই হামলায় হামাস নেতাদের এক আবাসিক ভবনকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।
জাতিসঙ্ঘের রাজনৈতিক-বিষয়ক আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেল রোজমেরি ডিকার্লো বলেন, দোহায় ইসরাইলি হামলা এই ভয়াবহ সংঘাতে নতুন ও ঝুঁকিপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে, যা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে গুরুতর হুমকির মুখে ফেলবে।
সূত্র : বাসস