মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার নির্দেম দিয়েছেন। এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছেন এবং একে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া এক বার্তায় বলেছেন, ‘প্রতিরক্ষা বিভাগকে যুদ্ধ বিভাগ হিসেবে পুনঃনামকরণ করে পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত অত্যাচারী দেশ আবারো তাদের পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করছে।’
তিনি বলেছেন, ‘এই একই দেশ ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচিকে হুমকি বলে অ্যাখ্যা দিয়েছে এবং আমাদের সুরক্ষিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে আরো হামলার হুমকি দিচ্ছে। যা আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।’
এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (অ্যাপেক) শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে সাক্ষাতের আগেই বৃহস্পতিবার ট্রাম্প তার মালিকানাধীন ট্রুথ সোশ্যালে এক বার্তায় এই ঘোষণা দেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি পেন্টাগনকে অবিলম্বে রাশিয়া ও চীনের মতো দেশের সাথে পাল্লা দিয়ে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। তার মতে, তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের ভাণ্ডার আগামী ‘পাঁচ বছরের মধ্যে’ যুক্তরাষ্ট্রের সমান হবে।
কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের সিনিয়র ফেলো ও পারমাণবিক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ অঙ্কিত পান্ডা বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ওয়াশিংটনের চলমান বিরোধের কারণে নয়, বরং রাশিয়া ও চীনের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় হয়তো ট্রাম্প এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই সপ্তাহে ঘোষণা করেছেন, মস্কো তাদের পোসেইডন পারমাণবিক-চালিত সুপার টর্পেডো পরীক্ষা করেছে। এর আগে, এই মাসের শুরুতে রাশিয়া নতুন বুরেভেস্টনিক পারমাণবিক-চালিত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও পরীক্ষা করেছে।
এদিকে সেপ্টেম্বর মাসে চীন একটি সামরিক কুচকাওয়াজে তার পারমাণবিক সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে। সে সময় ডংফেং-৫ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মতো নতুন ও পরিবর্তিত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবস্থা প্রদর্শিত হয়েছিল।
জাতিসঙ্ঘের মতে, প্রকাশ্যে এই ধরনের শক্তি প্রদর্শন সত্ত্বেও, রাশিয়া বা চীন কেউই কয়েক দশক ধরে কোনো পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়নি। ১৯৯৬ সালের একটি চুক্তি অনুসারে, পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইরান স্বাক্ষর করলেও মূল চুক্তি অনুমোদন করেনি। অন্যদিকে রাশিয়া ২০২৩ সালে তার অনুমোদন প্রত্যাহার করে নেয়।
মূত্র : আল জাজিরা



