পশ্চিমতীর দখল নিয়ে ইসরাইলকে আরব আমিরাতের হুঁশিয়ারি

১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের সময় পশ্চিমতীর ও পূর্ব জেরুসালেম দখল করার পর থেকে ইসরাইল প্রায় ১৬০টি অবৈধ বসতি নির্মাণ করেছে। এসব বসতিতে সাত লাখ ইহুদি বসবাস করেন।

নয়া দিগন্ত অনলাইন

সংযুক্ত আরব আমিরাত সর্তক করে জানিয়েছে, অধিকৃত পশ্চিমতীরকে দখলে যেকোনো পদক্ষেপ নিলে ইসরাইল ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করবে এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য আব্রাহাম চুক্তির মূল চেতনাকে ধ্বংস করবে।

আরব আমিরাতের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা লানা নুসেইবেহ বলেছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ইসরাইলি-ফিলিস্তিনি সংঘাতের দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে ভেস্তে দেবে। এদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ইসরাইলি সরকার এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। মূলত দেশটির কট্টরপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ পশ্চিমতীরের প্রায় চার-পঞ্চমাংশ দখলের প্রস্তাব উন্মোচনের পর নুসেইবেহ এই মন্তব্য করেছেন।

১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের সময় পশ্চিমতীর ও পূর্ব জেরুসালেম দখল করার পর থেকে ইসরাইল প্রায় ১৬০টি অবৈধ বসতি নির্মাণ করেছে। এসব বসতিতে সাত লাখ ইহুদি বসবাস করেন। একই এলাকায় বসবাস করছে আনুমানিক ৩৩ লাখ ফিলিস্তিনি। ফিলিস্তিনিরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের জন্য গাজার পাশাপাশি পশ্চিমতীর ও পূর্ব জেরুসালেম অন্তর্ভুক্ত করতে চান।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ২০২০ সালের আব্রাহাম চুক্তির ফলে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মরক্কো ইসরাইলের সাথে পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে।

চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যতম প্রধান শর্ত ছিল ইসরাইলকে বসতি স্থাপন ও জর্ডান উপত্যকাসহ পশ্চিমতীরের কিছু অংশ দখল করার পরিকল্পনা স্থগিত করতে হবে। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সেই সময় বলেছিলেন, তিনি পরিকল্পনাগুলো ‘স্থগিত’ করতে সম্মত হয়েছেন তবে সেগুলো বিবেচনাধীন রয়ে গেছে।

নেতানিয়াহুর ডানপন্থী ও বসতি স্থাপনকারীদের সমর্থক শাসক জোটের অনেক মন্ত্রীই দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমতীরের কিছু অংশ অথবা পুরো অংশ দখল করার পক্ষে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ আরো বেশ কিছু দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার ঘোষণা দেয়ার পর ইসরাইল তাদের দখল পরিকল্পনা এগিয়ে নেয়া নিয়ে বিতর্ক করছে।

নেতানিয়াহু বলেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া মানে ‘সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করা’।

উল্লেখ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত জাতিসঙ্ঘের ১৪৭টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে একটি, যারা ইতোমধ্যেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে।