যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের মধ্যে মধুর সম্পর্ক শেষ বলে দাবি করেছেন মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বেন লরবার। রোববার (২ অক্টোবর) কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ম্যাসাচুসেটসের সেন্টার ফর পলিটিক্যাল রিসার্চ অ্যাসোসিয়েটসের সিনিয়র ফেলো মার্কিন এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক স্থানীয় গণমাধ্যম যা-হাইলে একটি নিবন্ধ লিখেছেন। সেখানে তিনি ইসরাইল ও জায়নিজমের সমর্থক ডানপন্থীদের মাঝে বিরাট পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্রে এখন আর জায়নিজমের প্রতি মানুষের বিদ্বেষ কোনো গোপন বিষয় নয়। বরং তা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে গেছে।
প্রবন্ধে বিশ্লেষক দাবি করেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থনকারী জনপ্রিয় আন্দোলন মাগার মধ্যে এখন জায়নিজমের বিরোধিতা তুমুলভাবে স্পষ্ট। গত সপ্তাহে এটি প্রকাশ্যে এসে পড়ে।
তিনি আরো বলেন, ফক্স নিউজে রক্ষণশীল ভাষ্যকর ও সম্প্রচারক টাকার কার্লসন তার সান্ধ্যকালীন ‘টাকার কার্লসন আল লাইলাহ’ শিরোনামের একটি টকশোতে কট্টর জাতীয়তাবাদী শ্বেতাঙ্গ নিক ফুয়েন্তেস আমন্ত্রণ জানান। সেখানে তিনি ইসরাইল ও ইহুদিবাদি বিভিন্ন সংগঠন নিয়ে কথা বলেন। তখন থেকে জায়নিজম বিদ্বেষের বিষয়টি সামনে আসে।
লরবার বলেন, এই টকশোর পর থেকেই রক্ষণশীল মহলে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে যে ম্যাগার মতো আন্দোলনে ফুয়েন্তেসের মতো ব্যক্তিত্বদের রাখা ঠিক কিনা?
তবে এই বিতর্কটি তীব্র হয়ে ওঠেছে, যখন কার্লসনের পক্ষে ডানপন্থী হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের সভাপতি কেভিন রবার্টস কথা বলেন। তিনি ফুয়েন্তেসকে বহিষ্কার না করে তার সাথে বিতর্কের আহ্বান জানান। একইসাথে তিনি বলেন, যত ঝড়-ঝাপ্টাই আসুক না কেন, ইসরাইলের প্রতি যেকোনো সমর্থন দেয়ার আগে রক্ষণশীলদেরকে অবশ্যই প্রথমত খ্রিস্টবাদের জন্য, এরপর যুক্তরাষ্ট্রের জন্য চিন্তা করা উচিৎ।
অনেকেই রবার্টসের এই কথায় ইহুদি বিরোধী সুর লক্ষ্য করেছেন। রবার্ট মনে করেন, বিশ্বব্যাপী জায়নিজম লবি বর্তমানে খ্রিস্টীয় মতবাদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের সভাপতির এই বক্তব্যকে অনেকেই ইসরাইল ইস্যুতে ডানপন্থীদের স্পষ্ট অবস্থান বদল বলে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ, হেরিটেজ ফাউন্ডেশন গঠিতই হয়েছিল ট্রাম্পের শাসনামলে ফিলিস্তিনি তৎপরতাকে মূলোৎপাটনের জন্য। এর সভাপতির এমন ইহুদি বিরোধী বক্তব্যকে তাই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।
মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বেন লরবার বলেন, হেরিটেজ ফাউন্ডেশন গঠনের পর ট্রাম্প এর অনেকগুলো লক্ষ্য বাস্তবায়নও করেছিলেন। এরই প্রেক্ষিতে ফিলিস্তিনিপন্থী মাহমুদ খলিলকে সংহতি আন্দোলনের সময় গ্রেফতার করা হয়। কলোম্বিয়ার মতো বিশ্ববিদ্যালয়কে চাপের মুখে ফেলেন। ফিলিস্তিনপন্থী নানা সংগঠনকে হুমকিও দিয়েছেন।
তবে লরবার বলেন, ওই সময় ডানপন্থীদের ইহুদিবিদ্বেষকে এই ফাউন্ডেশনের লক্ষ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রকল্প প্রস্তুতকারকরা বলেছিল যে ডানপন্থীদের চেয়ে বামপন্থীদের থেকে ঝুঁকি বেশি।
সূত্র : আল জাজিরা



