ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সরাসরি আলোচনা করবে না তেহরান। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনাকে ‘নিষ্ফল প্রচেষ্টা’ হিসেবে অভিহিত করে এ মন্তব্য করেছেন।
জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ফাঁকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কূটনৈতিক আলোচনা চলছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) খামেনির বক্তব্যের আগে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের কূটনীতিক এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাজা কালাসের সাথে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের বিষয়ে বৈঠক করেন। কয়েকদিন পরেই এই নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হতে চলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনা পুনরায় শুরু করা আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এদিকে গতকাল জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে বক্তব্য দেয়ার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ইরান ‘কখনো পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হবে না’। এ সময় তিনি তেহরানকে ‘বিশ্বের সন্ত্রাসের এক নম্বর পৃষ্ঠপোষক’ হিসেবে অভিহিত করেন।
খামেনি তার রেকর্ড করা ভাষণে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার ফলাফল আগেই ঘোষণা করেছে। ফলাফল হলো পারমাণবিক কার্যক্রম ও সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করা। এটি কোনো আলোচনা নয়। এটি চাপিয়ে দেয়া নির্দেশ।’
খামেনির ভাষণের কয়েকদিন আগেই জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। একত্রে ই-৩ নামে পরিচিতি যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি তেহরানকে তার পারমাণবিক প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির অধীনে অনুমোদিত মাত্রার ৪০ গুণেরও বেশি ইউরেনিয়াম মজুদ তৈরি করা। ওই চুক্তি থেকে ট্রাম্প ২০১৮ সালে একতরফাভাবে সরে আসেন।
যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বশক্তিগুলোর সাথে স্বাক্ষর করা ‘দ্য জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (জেসিপিওএ)’ চুক্তির মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক আকাঙ্ক্ষা সীমিত করার বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছিল।
ইউরোপীয় দেশগুলো বলেছে, ইরান যদি তার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আবার যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সরাসরি আলোচনা শুরু করে, জাতিসঙ্ঘের পারমাণবিক পরিদর্শকদের তার পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে প্রবেশের অনুমতি দেয় এবং তেহরান ৪০০ কেজির বেশি উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের হিসাব দেয়, তবে তারা নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা বাড়াবে।
মঙ্গলবার জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে অনুষ্ঠিত বৈঠকে খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়াদেফুল বলেন, এটি বিশেষ ফলপ্রসূ হয়নি। এদিকে কাজা কালাস বলেন, ইউরোপীয় আলোচনাকারী দল নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ইরানের কাছ থেকে ‘কিছু বাস্তব পদক্ষেপ’ দেখতে চায়।
সূত্র : আল জাজিরা