ইসরাইলের একটি মানবাধিকার গোষ্ঠী জানিয়েছে, দুই বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ইসরাইলি কারাগারে আটক কমপক্ষে ৯৪ জন ফিলিস্তিনি বন্দী নিহত হয়েছেন। ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস ইসরাইল (পিএইচআরআই)-এর একটি নতুন প্রতিবেদনে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ও ধামাচাপা দেয়ার’ অভিযোগ করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময়কাল অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আগের ১০ বছরে ইসরাইলি হেফাজতে ৩০ জনেরও কম ফিলিস্তিনি মারা গেছেন।
ইসরাইল প্রিজন সার্ভিস (আইপিএস) জানিয়েছে, তারা ‘আইন অনুসারে ও সরকারি সংস্থার তত্ত্বাবধানে কাজ করে’। তবে তারা বাইরের সংস্থাগুলোর পরিসংখ্যান বা অভিযোগের ওপর কোনো মন্তব্য করেনি।
আইপিএস দাবি করেছে, ‘সব বন্দীকে আইনি প্রক্রিয়া অনুসারে আটক রাখা হয় এবং পেশাদার প্রশিক্ষিত কর্মীদের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা, স্বাস্থ্যবিধি এবং পর্যাপ্ত জীবনযাত্রার সুযোগসহ তাদের অধিকারগুলো সমুন্নত রাখা হয়।’
৭ অক্টোবর ২০২৩ সাল থেকে গাজা ও অধিকৃত পশ্চিমতীরজুড়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে আটক করা হয়েছে। যাদের অনেকের বিরুদ্ধেই কোনো অভিযোগ নেই। ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ রেডক্রসকে আটক ফিলিস্তিনিদের সম্পর্কে তথ্য প্রদান বন্ধ করে দিয়েছে এবং আটক কেন্দ্রগুলোতে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করেছে।
পিএইচআরআই বলেছে, তারা ইসরাইলে আটক ও ‘নিরাপত্তা বন্দী’ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি গভীর উদ্বেগজনক ধরন উন্মোচিত করেছে। তাদের প্রতিবেদনটি সরকারি রেকর্ড ও ফরেনসিক রিপোর্টের সাথে ক্রস-রেফারেন্স করা তথ্য, অন্যান্য মানবাধিকার গোষ্ঠীর তথ্য এবং নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের শনাক্ত করার প্রচেষ্টার পাশাপাশি বন্দী, তাদের পরিবার ও আইনজীবীদের সাক্ষ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৫২ জন সামরিক কারাগারে বন্দী ছিলেন এবং ৪২ জন আইপিএস পরিচালিত বেসামরিক কারাগারে মারা গেছেন। শারীরিক সহিংসতা, চিকিৎসা অবহেলা অথবা উভয়ের কারণেই এসব বন্দীরা নিহত হয়েছেন।
পিএইচআরআই বলেছে, ইসরাইলের ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী বেন-গভিরের নিয়ন্ত্রণে ফিলিস্তিনিদের আটকে রাখা ইসরাইলি কারাগারগুলোকে ‘নির্যাতন স্থানে রূপান্তরিত করা হয়েছে’।
সূত্র : বিবিসি



