আরো ৪ পণবন্দীর লাশ হস্তান্তর করল হামাস

ইসরাইলও মঙ্গলবার ৪৫ জন নিহত ফিলিস্তিনির লাশ গাজায় ফেরত দিয়েছে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
রেডক্রসের মাধ্যমে গাজা থেকে পণবন্দীদের লাশ ফেরত দেয় হামাস
রেডক্রসের মাধ্যমে গাজা থেকে পণবন্দীদের লাশ ফেরত দেয় হামাস |সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা থেকে হামাস আরো চার ইসরাইলি পণবন্দীর লাশ ইসরাইলের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) গভীর রাতে রেডক্রসের মাধ্যমে লাশগুলো ইসরাইলি সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে, ইসরাইল ২৮ জন নিহত পণবন্দীর লাশ ফেরত না দেয়া পর্যন্ত গাজায় ত্রাণ সরবরাহ সীমিত রাখার হুমকি দিয়েছে। এর আগে সোমবার ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী এই গোষ্ঠীটি ২০ জন জীবিত ও চার পণবন্দীর লাশ হস্তান্তর করেছে।

রেডক্রস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মঙ্গলবার ইসরাইল ৪৫ জন নিহত ফিলিস্তিনির লাশ গাজায় ফেরত দিয়েছে। তাদের লাশ এতদিন ইসরাইলেই ছিল।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় করা যুদ্ধবিরতি চুক্তি (যা ইসরাইল ও হামাস উভয়ই মেনে নিয়েছে) অনুযায়ী, সোমবার দুপুরের মধ্যে ৪৮ জন পণবন্দীকে ফেরত দেয়ার কথা ছিল। তবে গাজা থেকে সব জীবিত পণবন্দী ইসরাইলে ফেরত গেলেও এখনো ২০ জনের লাশ ফেরত না দেয়ায় হামাসের ওপর ইসরাইলি সরকারের চাপ বাড়ছে।

ইসরাইলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামাস চুক্তি লঙ্ঘন করে পণবন্দীদের লাশ ফেরত না দেয়ায় তারা গাজায় ত্রাণ সহায়তা সীমিত করবে। একইসাথে মিসরের সাথে রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেয়ার পরিকল্পনাও স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরাইল।

অন্যদিকে হামাস বলেছে, নিহত পণবন্দীদের লাশ শনাক্ত করতে তাদের অসুবিধা হচ্ছে। গত সপ্তাহে ইসরাইলি গণমাধ্যমে প্রকাশিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে বলা হয়, হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হয়তো নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সব লাশ খুঁজে না-ও পেতে পারে।

একজন ইসরাইলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যারা এখনো ফেরত আসেনি কিংবা যাদের লাশ পাওয়া যায়নি, তাদের খুঁজে বের করতে একটি আন্তর্জাতিক টাস্কফোর্স কাজ শুরু করবে।

দুই বছর ধরে চলা এই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ঘোষিত ২০-দফা শান্তি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ১০ অক্টোবর স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

তবে মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির মধ্যেও ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় পূর্ব গাজা ও খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চলে আলাদা দুটি ঘটনায় সাতজন নিহত হয়েছে।

গাজার পূর্বাঞ্চলীয় শেজাইয়া এলাকায় ইসরাইলি ড্রোন হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা ওয়াফা। ওয়াফা একটি হাসপাতাল সূত্রের বরাতে জানায়, অনেকদিন পর ফিলিস্তিনিরা ওই এলাকায় ফিরে যখন তাদের বাড়িঘর দেখছিল তখন তাদের ওপর ড্রোন হামলা চালানো হয়।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর দাবি, ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা অনুযায়ী হলুদ রেখা পর্যন্ত তাদের সৈন্যরা সরে গিয়েছে। এই হলুদ রেখা কোনো কোনো ফিলিস্তিনি অতিক্রমের চেষ্টার কারণেই গুলি চালানো হয়েছে।

সূত্র : বিবিসি