তুরস্কে বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)’র আরো তিনজন মেয়রকে শনিবার ভোরে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তের অংশ হিসেবে এ অভিযান চালানো হয়। তবে সিএইচপি একে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযান’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
গত ২০২৪ সালের স্থানীয় নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের একে পার্টিকে বড় পরাজয়ের মুখে ফেলে সিএইচপি তুরস্কজুড়ে জনসমর্থন বাড়িয়েছে। এরপর থেকেই বিরোধী নেতাদের ওপর সরকারি চাপ বাড়ছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের।
সাম্প্রতিক গ্রেফতারগুলো মার্চ মাসে ইস্তাম্বুলের প্রভাবশালী মেয়র ও ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সিএইচপি প্রার্থী একরেম ইমামওগলুকে সরিয়ে দেয়ার ঘটনার ধারাবাহিকতায় ঘটল। তার গ্রেফতারের পর দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়, যা ২০১৩ সালের পর তুরস্কে সবচেয়ে বড় রাজপথ আন্দোলন হিসেবে দেখা দেয়।
এই সপ্তাহের শুরুর দিকে দেশটির তৃতীয় বৃহত্তম শহর ইজমিরে দুর্নীতির অভিযোগে পুলিশ ১৩৭ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারি পরোয়নায় মোট ১৫৭ জনের নাম রয়েছে।
ইস্তাম্বুল থেকে এএফপি জানায়, শনিবার যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা হলেন- দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আদানা’র মেয়র জেইদান কারালার, উপকূলীয় শহর আন্তালিয়ার মেয়র মুহিত্তিন বোজেক এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের আদিয়ামান শহরের মেয়র আবদুররহমান তুতদের।
কারালারকে যখন পুলিশি গাড়িতে নেয়া হচ্ছিল, তখন এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, কেন তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘যেখানে প্রভাবশালী সাংবাদিক বা রাজনীতিবিদ আছেন, ওদের চুপ করিয়ে দেয়া হয়।’
আঙ্কারার বিরোধীদলীয় মেয়র মানসুর ইয়াভাশ বলেছেন, ‘যেখানে আইন রাজনীতির কারণে বাঁক নেয়, এক পক্ষের জন্য ন্যায়বিচার চলে আর অন্য পক্ষের জন্য থেমে যায়, সেখানে আইন বা ন্যায়বিচারের ওপর আস্থা রাখা যায় না। আমরা অন্যায়ের কাছে মাথা নত করব না।’
এরদোগান শনিবার আনাদোলু বার্তা সংস্থাকে বলেন, ‘সিএইচপি রাস্তায় নামার মাধ্যমে তাদের অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করছে এবং আমাদের বিচার বিভাগকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে।’
এদিকে সোমবার রাজধানী আঙ্কারার একটি আদালতে সিএইচপি’র ২০২৩ সালের দলীয় নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোট কেনাবেচার অভিযোগে একটি মামলার শুনানি শুরু হয়েছে, যা দলের নেতা ওজেলকে অপসারণের দিকে যেতে পারে।
বিরগুন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, একই দুর্নীতির মামলায় ইস্তাম্বুলের বুয়ুকচেকমেজে জেলার উপ-মেয়র আহমেত শাহিনকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সূত্র : এএফপি