নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য ইসরাইলি সেনাপ্রধানের

বৈঠকে জামির যুদ্ধ সম্পর্কে স্পষ্ট রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি না থাকার কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, নেতানিয়াহু সেটি আমাদের জানতে দেন না। আমরা চাই, সরকার কোনো পদক্ষেপ নিলে যেন স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয়া হয়।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
ইসরাইলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির
ইসরাইলি সেনাপ্রধান ইয়াল জামির |সংগৃহীত

গাজা যুদ্ধে নেতানিয়াহুর পদক্ষেপ নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন ইসরাইলের সেনাপ্রধান ইয়াল জামির। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ইসরাইলি গণমাধ্যম ইয়োদিওথ আহরনোথের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলি সেনাপ্রধান গোয়েন্দা বিভাগের উপ-কমিটির এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কর্মপদ্ধতি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছে। এই উপ-কমিটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়।

বৈঠকে জামির যুদ্ধ সম্পর্কে স্পষ্ট রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি না থাকার কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, নেতানিয়াহু সেটি আমাদের জানতে দেন না। আমাদের শুধু প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। কিন্তু আমরা কিসের প্রস্তুতি নেব, সেটি বলা হয় না। সেজন্য আমরা চাই, সরকার যখন কোনো পদক্ষেপ নিতে চায়, তখন সেটি যেন স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয়া হয়।

গাজার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের পর ইসরাইলি বাহিনী সেখানে কী করতে হবে, ওই বিষয়ে তাদের কিছুই জানানো হয়তি বলেও জানান তিনি।

মানবিক বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে জামির বলেন, গাজায় ত্রাণবিতরণ কেন্দ্রগুলোর পদক্ষেপ একদম ব্যর্থ। তিনি আরো বলেন, আমার এটা বুঝে আসছে না যে সেখানে আমরা কেন অর্থ খরচ করছি; যে পরিকল্পনাকে সামনে রেখে এসব ত্রাণ কেন্দ্র খোলা হলো, সেটি ব্যর্থ হওয়ার পরও কেন এসব কেন্দ্র বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

গাজা দখলের ঝুঁকি

বৈঠকে গাজা দখলের ঝুঁকিসমূহ তুলে ধরেছেন সেনাপ্রধান। সেখানে তিনি বলেন, গাজা দখল করতে গেলে আমাদের বেশ কয়েকটি ঝুঁকির মুখোমুখি হতে হবে। যেমন, সেখানে আমাদের সেনাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে থাকবে; ঝুঁকির মধ্যে পড়বে হামাসের হাতে বন্দী ইসরাইলিদের জীবন; এতে আন্তর্জাতিক সমর্থনও কমে যাবে; আর গাজা সিটির লোকজনকে বাস্তুচ্যুত করাও কঠিন হয়ে যাবে।

এ সময় জামির সতর্ক করেন যে শেষমেষ গাজায় সামরিক শাসন জারি করা লাগতে পারে। কিন্তু সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকা শাসন করতে প্রস্তুত নয়।

সেনাপ্রধান বলেন, হামাস যখন গাজা সিটির দিকে ইসরাইলি বাহিনীর চূড়ান্ত অভিযানের কথা জানতে পারবে, তখন তারা কোন ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে, ওই বিষয়েও কোনো ধারণা নেই সেনাবাহিনীর।

তিনি আরো বলেন, সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের সহযোগিতায় নতুন যুদ্ধকৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এরপরও ইসরাইলি বন্দীদের নিরাপত্তা ঝুঁকি কমানো যাচ্ছে না।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে জামির বলেন, আমরা গিডিয়নের রথ-২ অভিযানের জন্য আবারো প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা গাজা সিটির পশ্চিমাঞ্চলীয় মহল্লাগুলোতে প্রবেশ করবে।

তবে ইসরাইলি বাহিনী আশঙ্কা করছে যে এই অভিযানের সময় হামাস কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে। সেজন্য সেনা কমান্ডররা সতর্ক করছে যে এখানে রাজনৈতিক বা সামরিক যেকোনো ব্যর্থতা দীর্ঘ মেয়াদে কৌশল সঙ্কটের দিকে নিয়ে যাবে।

সূত্র : আল জাজিরা