ড্রোন পরীক্ষা তদারকিতে এআই উন্নয়নের নির্দেশ কিম জং উনের

পিয়ংইয়ং গত বছর প্রথমবার আক্রমণাত্মক ড্রোন উন্মোচন করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সক্ষমতা রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার বাড়তে থাকা মৈত্রী সম্পর্কের সাথে যুক্ত হতে পারে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন |সংগৃহীত

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন একটি আক্রমণাত্মক ড্রোন পরীক্ষা তদারকির সময় দ্রুত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি উন্নয়নের নির্দেশ দিয়েছেন। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে।

কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ অ্যাজেন্সি (কেসিএনএ)-এর প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, চালকবিহীন ড্রোনটি উড্ডয়নের পর লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করছে।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মহড়া ‘কুমসং-সিরিজের কৌশলগত আক্রমণ ড্রোনের অসাধারণ যুদ্ধক্ষমতা’ প্রমাণ করেছে এবং কিম ‘ব্যাপক সন্তুষ্টি’ প্রকাশ করেছেন।

কিম বলেছেন, ড্রোনগুলো প্রধান সামরিক সম্পদ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। তাই উত্তর কোরিয়ার সশস্ত্র বাহিনী আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে একে শীর্ষ অগ্রাধিকার ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি নতুনভাবে চালু হওয়া এআই প্রযুক্তি দ্রুত উন্নয়নের পাশাপাশি ড্রোন উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি ও শক্তিশালীকরণে উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

সিউলের কোরিয়া ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল ইউনিফিকেশনের বিশ্লেষক হং মিন বলেন, কিম অন্যতম শক্তিশালী দেশ হিসেবে মর্যাদা অর্জনের জন্য ড্রোন প্রযুক্তিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন।

ড্রোন উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কারণ এগুলো কম খরচে বেশি কার্যকর হুমকি তৈরি করে; স্বয়ংক্রিয় মিশন সম্পাদন, নির্ভুলতা ও প্রাণঘাতী ক্ষমতা বৃদ্ধি, ব্যাপক উৎপাদনের উপযোগিতা এবং কৌশলগত নমনীয়তা বাড়ায়।

তিনি বলেন, ‘ড্রোনগুলো উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কারণ এগুলো কম খরচে কার্যকর হুমকি তৈরি করে, স্বয়ংক্রিয় মিশন সম্পাদন, নির্ভুলতা ও প্রাণঘাতী ক্ষমতা বৃদ্ধি, ব্যাপক উৎপাদনের উপযোগিতা এবং কৌশলগত নমনীয়তা বাড়ায়।

রাশিয়া থেকে শিক্ষা

পিয়ংইয়ং গত বছর প্রথমবার আক্রমণাত্মক ড্রোন উন্মোচন করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সক্ষমতা রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার বাড়তে থাকা মৈত্রী সম্পর্কের সাথে যুক্ত হতে পারে। রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে লড়াই করা উত্তর কোরীয় সেনারা আধুনিক যুদ্ধের অভিজ্ঞতা অর্জন করছে, বিশেষত যুদ্ধক্ষেত্রে ড্রোন ব্যবহারের কৌশল।

দক্ষিণ কোরিয়ার কিয়ংনাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লিম বলেন, এআই প্রযুক্তি ড্রোনগুলোকে এমনভাবে পরিচালনা করতে সক্ষম করে, যাতে জিপিএস বা যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হলেও পূর্বপ্রশিক্ষিত অ্যালগরিদমের মাধ্যমে কাজ চালিয়ে যেতে পারে।

তিনি আরো বলেন, রাশিয়ার প্রযুক্তি হস্তান্তর ও ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ২০২৪ সাল থেকে উত্তর কোরিয়ায় এআই চালিত প্রযুক্তি দ্রুত উন্নয়ন হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়া ও পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থা জানায়, ২০২৪ সালে উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ১০ হাজারের বেশি সেনা পাঠিয়েছে এবং গোলাবারুদ, ক্ষেপণাস্ত্র ও দূরপাল্লার রকেট সিস্টেম সরবরাহ করেছে। রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০০ উত্তর কোরীয় সৈন্য নিহত ও কয়েক হাজার আহত হয়েছেন।

সূত্র : বাসস