চীন সম্প্রতি তাদের নৌ-বহরের তৃতীয় বিমানবাহী রণতরি ফুজিয়ান ড্রাগনের একটি প্রচারণামূলক ভিডিও প্রকাশ করেছে। এটি তাদের নৌ-শিল্পের উৎকর্ষের প্রোজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
চীন প্রতিবছরই বিপুলসংখ্যক নৌ-যান যুক্ত করে তাদের বহরে। ফুজিয়ান ড্রাগন ওই বহরেরই নতুন সংযোজন। ফরাসি ম্যাগাজিন লে পয়েন্টে একে ‘চীনা ড্রাগন’ হিসেবে পরিচিত করানো হয়েছে।
ফরাসি ম্যাগাজিন জানিয়েছে, ফুজিয়ান চীনের অন্যান্য বিমানবাহী রণতরীর চেয়ে ব্যতিক্রম। চীন আগে বিদেশী সহায়তা নিয়া কিংবা রাশিয়ার নকশার উপর ভিত্তি করে রণতরী বানাতো। তবে ফুজিয়ানকে সম্পূর্ণ নিজস্ব ডিজাইনে চীনেই তৈরি করা হয়েছে। ফলে এটি চীনের নৌ-শিল্পের উল্লেখযোগ্য উৎকর্ষ প্রমাণ করে।
ফুজিয়ানের উচ্চ প্রযুক্তিগত সক্ষমতা
ফুজিয়ান উন্নত প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। এটি দৈর্ঘ্যে ৩১৬ মিটার দীর্ঘ আর প্রস্থ্যে ৭৫ মিটার; একসাথে ৮৫ হাজার টন ভার বহন করতে পারে। এটি আকার ও বহন ক্ষমতার দিক থেকে ফরাসি রণতরী চার্লস ডি গলের চেয়েও উন্নত। এই বৈশিষ্ট্য তাকে বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরীতে উন্নীত করেছে।
ফুজিয়ান চীনের প্রথম ক্যাটোবার ক্যারিয়ার, যা মার্কিন নৌবাহিনীর ব্যবহৃত বিমান ব্যবস্থার অনুরূপ একটি ক্যাটাপল্ট-লঞ্চড বিমান ব্যবস্থা। লে পয়েন্টের মতে, এই ব্যবস্থা বিমানগুলোকে সম্পূর্ণ অস্ত্র এবং জ্বালানি নিয়ে উড়তে সক্ষম করে, যা অভিযানের সময় তাদের আরো বেশি সুবিধা প্রদান করে।
নতুন এই বিমানবাহী রণতরীতে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ক্যাটাপল্ট ব্যবহার করা হয়েছে। এই প্রযুক্তি শুধু মার্কিন বিমানবাহী রণতরী জেরাল্ড ফোর্ডে ব্যবহৃত হয়েছে। এদিক থেকে চীন এই অঙ্গনের পথিকৃৎ শক্তির কাতারে এসে দাঁড়িয়েছে।
ভিডিওর শেষ দিকে ফুজিয়ান থেকে তিন ধরনের বিমানের উৎক্ষেপন ও অবতরণের দৃশ্য দেখানো হয়েছে। প্রথমে জে-৩৫-এর দৃশ্য দেখানো হয়েছে। এটি মার্কিন এফ-২২ এবং এফ-৩৫ এর মতো পঞ্চম প্রজন্মের স্টিলথ ফাইটার। এরপর আসে জে-১২-এর পালা। এটি সুখোই এসইউ-৩৩-এর একটি ডেরিভেটিভ ফাইটার। সর্বশেষ কেজে-৬০০ রাডারের দৃশ্য দেখানো হয়। এটি মার্কিন ই-২-সি হকআইয়ের মতো একটি রাডার।
মোটকথা, ফুজিয়ান ৬৪টি বিমান নিয়ে পুরো ৪৫ দিন স্বাভাবিকভাবে ভেসে বেড়াতে পারবে। এটি চীনের সামুদ্রিক প্রভাব-প্রতিপত্তি অনেক গুণ বৃদ্ধি করবে।
সূত্র : আল জাজিরা