থাইল্যান্ডের সংসদে শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) এক ডানপন্থী ধনকুবের ব্যবসায়ীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভোট দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। ফলে দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রভাবশালী সিনাওয়াত্রা পরিবার তার গদি হারাবে। দেশটির আদালত ইতোমধ্যেই পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে বরখাস্ত করেছে।
২০২৩ সালের নির্বাচনের পর থেকে থাইল্যান্ডের শীর্ষ পদে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করে আসছে শক্তিশালী সিনাওয়াত্রা পরিবারের ফিউ থাই পার্টি। কিন্তু গত সপ্তাহে আদালতের রায়ে পরিবারটির উত্তরাধিকারী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে পদচ্যুত করা হয়েছে।
ক্ষমতার শূন্যস্থান পূরণে তৎপর হয়ে নির্মাণ খাতের সফল ব্যবসায়ী আনুতিন চার্নভিরাকুল বিরোধী দলের যথেষ্ট সমর্থন আদায় করতে পেরেছেন। এই সমর্থন তাকে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে সুবিধাজনক সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
আনুতিন একসময় সিনাওয়াত্রাদের ফিউ থাই জোটকে সমর্থন করতেন। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ কম্বোডিয়ার সাথে সীমান্ত বিরোধের সময় পেতংতার্নের আচরণের ওপর ক্ষোভের কারণে তিনি এই জোট ত্যাগ করেন।
পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী পদে ভোট শুরু হয়েছে স্থানীয় সময় বেলা ১২টা ৩০ মিনিটে। প্রধানমন্ত্রী পদ নিশ্চিত করতে ২৪৭ জন আইনপ্রণেতার সমর্থন প্রয়োজন। পার্লামেন্ট ভবনটি আনুতিনের পারিবারিক নির্মাণপ্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে।
৫৮ বছর বয়সী আনুতিন এর আগে উপ-প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে তিনি সম্ভবত সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত ২০২২ সালে গাঁজা বৈধ করার প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য। ভোট দিতে আসার সময় তিনি এক দল সাংবাদিককে বলেন, ‘উত্তেজিত বোধ করা স্বাভাবিক।’
থাইল্যান্ডের বৃহত্তম বিরোধী দল পিপলস পার্টি আনুতিনকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তার ভুমজাইথাই পার্টি সংসদে তৃতীয় বৃহত্তম হওয়ায় তিনি অন্যান্য মিত্রদের সমর্থন পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, পিপলস পার্টি তাদের সমর্থনের শর্ত দিয়েছে, আগামী চার মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচনের জন্য সংসদ ভেঙে দিতে হবে।
তবুও তার প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হওয়া সিনাওয়াত্রা পরিবারের জন্য আরেকটি বড় ধাক্কা হবে। পরিবারটিকে গত দুই দশক ধরে থাই রাজনীতির মূল ভিত্তি হিসেকে বিবেচনা করা হয়। দলটি দীর্ঘদিন ধরেই সামরিকপন্থী, রাজতন্ত্রপন্থী প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রতিযোগিতা করে আসছে, কিন্তু আইনি ও রাজনৈতিক বাধার কারণে তা ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে।
সূত্র : এএফপি



