যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী অভিযানে আটক শ্রমিকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে দক্ষিণ কোরিয়া বুধবারের মধ্যে একটি চার্টার্ড বিমান পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। দেশটির বিমানসংস্থা কোরিয়ান এয়ার বার্তাসংস্থা এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছে।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলের জর্জিয়া রাজ্যে নির্মিত হুন্দাই-এলজি ব্যাটারি কারখানায় অভিযানের সময় দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা বেশ কয়েকজন দক্ষিণ কোরিয়ান কর্মীসহ প্রায় ৪৭৫ জনকে আটক করেছেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশব্যাপী অভিবাসন বিরোধী অভিযানের অধীনে এটিকে একক স্থানে পরিচালিত বৃহত্তম অভিযান বলে অভিহিত করেছেন তারা।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল সোমবার আলোচনার জন্য ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন। তিনি দেশের নাগরিকদের গণহারে আটককে ‘গুরুতর পরিস্থিতি’ বলে অভিহিত করে ‘সুস্থতার সাথে’ তাদের দ্রুত প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
অন্যদিকে কোরিয়ান এয়ার জানায়, বুধবারের মধ্যে আটলান্টায় একটি চার্টার্ড বোয়িং ৭৪৭-৮আই বিমান পাঠানো হতে পারে। মঙ্গলবার কোরিয়ান এয়ারের একজন মুখপাত্র এএফপিকে জানান, ‘এখনকার জন্য এটাই আমাদের লক্ষ্য।’
সিউল জানায়, আটক শ্রমিকদের মুক্তি ও প্রত্যাবাসনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি চুক্তি ‘সম্পন্ন’ হয়েছে। প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরে একটি চার্টার্ড বিমানে করে তাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে।
দক্ষিণ কোরিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা মিত্র, এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি ও গুরুত্বপূর্ণ অটোমোবাইল ও ইলেকট্রনিক্স উৎপাদনকারী দেশ। সিউল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে শুল্ক আলোচনার সময় মার্কিন ব্যবসায় বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগের জন্য ওয়াশিংটনের বারবার আহ্বানে সাড়া দিয়েছে।
অভিযানটি জর্জিয়ায় একটি ব্যাটারি সেল উৎপাদন কারখানায় চালানো হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার দুটি কোম্পানি- হুন্দাই ও এলজি এনার্জি সলিউশনের মধ্যে ৪.৩ বিলিয়ন ডলারের যৌথ উদ্যোগে ওই ব্যাটারি সেল উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আটক দক্ষিণ কোরিয়ার বেশিভাগ কর্মী সম্ভবত এমন ভিসায় ছিলেন, যা হাতে-কলমে নির্মাণ কাজের অনুমতি দেয় না।
এলজি এনার্জি সলিউশন জানায়, তাদের ৪৭ জন কর্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারদের মধ্যে ৪৬ জন দক্ষিণ কোরিয়ান ও একজন ইন্দোনেশিয়ান নাগরিক রয়েছে। এছাড়াও গ্রেফতারদের মধ্যে প্রায় ২৫০ জন তাদের ঠিকাদারদের মাধ্যমে নিযুক্ত ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে এবং তাদের বেশিভাগই দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক।
সূত্র : বাসস