কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নিকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ায় এপেক সম্মেলনের ফাঁকে কার্নির সাথে এক বৈঠকে তিনি এ আমন্ত্রণ জানান। একই দিনে তিনি জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির সাথেও প্রথমবারের মতো বৈঠক করেন।
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে কানাডার সাথে চীনের সম্পর্ক সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে রয়েছে। তবে উভয় দেশই ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈশ্বিক শুল্ক নীতির শিকার। উত্তেজনা কমাতে বৃহস্পতিবার শি ও ট্রাম্পের মধ্যে একটি চুক্তি হলেও পরিস্থিতি এখনো জটিল।
কার্নির সাথে বৈঠকে শি জিনপিং বলেন, ‘সম্প্রতি দ্বিপক্ষীয় প্রচেষ্টা চীন-কানাডা সম্পর্ক ইতিবাচক ধারায় ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা চীন-কানাডা সম্পর্ককে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে প্রস্তুত।’ এ সময় তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানান।
কার্নি শি’র আমন্ত্রণ গ্রহণ করে বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের সম্পৃক্ততা কম ছিল।’
তিনি দুই দেশের ‘বর্তমান সমস্যাগুলো’ সমাধানের পথ হিসেবে ‘গঠনমূলক ও বাস্তবসম্মত সংলাপের’ ওপর জোর দেন। পাশাপাশি, ‘আরো টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার’ উপায় হিসেবেও এই সংলাপ জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
২০১৮ সালে কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে একজন চীনা টেলিকম কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে। পাল্টা জবাবে চীন দুই কানাডীয়কে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক করে। এরপর থেকেই দুই দেশের সম্পর্ক তীব্র সঙ্কটে পড়ে।
কার্নি চলতি বছরের জুলাইয়ে চীনা স্টিলজাত পণ্য আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেন। এর জবাবে আগস্টে চীন কানাডীয় ক্যানোলা আমদানির ওপর ৭৫.৮ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে।
কানাডা বিশ্বের অন্যতম প্রধান ক্যানোলা উৎপাদক দেশ। এই তেলবীজ ফসল থেকে রান্নার তেল, পশুখাদ্য ও বায়োডিজেল তৈরি হয়।
ট্রাম্প বৃহস্পতিবার ঘোষণা দেন, চীনের ওপর ফেন্টানিল-সম্পর্কিত শুল্ক অর্ধেকে নামিয়ে ১০ শতাংশ করা হবে।
অপরদিকে শি জানান, চীন যুক্তরাষ্ট্রে বিরল খনিজ রফতানি অব্যাহত রাখবে এবং বেশি পরিমাণে সয়াবিন আমদানি করবে। তবে এখনো চীনা আমদানির ওপর গড় মার্কিন শুল্ক ৪৭ শতাংশে রয়ে গেছে বলে জানান ট্রাম্প।
এপেক সম্মেলনে কার্নি বলেন, ‘নিয়মমাফিক মুক্ত বাণিজ্য ও বিনিয়োগের যে পুরনো বিশ্ব ছিল, যার ওপর আমাদের, বিশেষ করে কানাডার সমৃদ্ধি নির্ভর করত, সেই বিশ্ব এখন আর নেই।’
এশিয়ার প্রধান তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহকারী হিসেবে তিনি কানাডাকে ‘জ্বালানি পরাশক্তি’ হিসেবে তুলে ধরেন।
সূত্র : এএফপি/বাসস



