ফুকুশিমা বিপর্যয়ের জেরে ১৫ বছর বন্ধ রাখার পর আবারো বিশ্বের বৃহত্তম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে জাপান। দেশটির নিগাতা অঞ্চলের কর্তৃপক্ষ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নতুন করে চালুর সিদ্ধান্ত অনুমোদন দিতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশটির পারমাণবিক শক্তিতে ফেরার পথে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়।
টোকিও থেকে প্রায় ২২০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে কাশিওয়াজাকি-কারিওয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির অবস্থান। ২০১১ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্প ও সুনামিতে ফুকুশিমা দাইচি কেন্দ্র ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর বন্ধ ঘোষণা করা ৫৪টি পারমাণবিক চুল্লির মধ্যে এটি একটি। চেরনোবিলের পর বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ পারমাণবিক দুর্ঘটনা ছিল এটি।
এরপর থেকে জাপান আমদানি করা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে আসার চেষ্টা করে এবং চালু থাকা ৩৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে ১৪টি পুনরায় চালু করে। নতুন করে চালু হওয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মধ্যে কাশিওয়াজাকি-কারিওয়া হবে প্রথম কেন্দ্র, যেটি পরিচালনা করবে টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি (টেপকো)। প্রতিষ্ঠানটি ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও পরিচালনা করত।
স্থানীয় আইনপ্রণেতারা দিনের শেষের দিকে তাদের সিদ্ধান্ত জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ বিক্ষোভকারী, যাদের বেশিভাগই প্রবীণ, এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করে রাস্তায় নেমে এসেছেন। তারা ‘পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ করুন’, ‘আমরা কাশিওয়াজাকি-কারিওয়া পুনরায় চালু করার বিরোধিতা করি’ এবং ‘ফুকুশিমাকে সমর্থন করুন’ লেখা ব্যানার ধরে নিগাতা প্রিফেকচারের সামনে জড়ো হয়েছেন।
টেপকোর মুখপাত্র মাসাকাতসু তাকাতা বলেছেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেন এই ধরনের দুর্ঘটনা আর না ঘটে এবং নিগাতার বাসিন্দারা যেন কখনো একই রকম কোনো কিছুর সম্মুখীন না হন।’
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে জানিয়েছে, অনুমোদন পাওয়া গেলে আগামী ২০ জানুয়ারি ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সাতটি চুল্লির মধ্যে প্রথমটি আবারো চালুর কথা বিবেচনা করছে টেপকো। তবে ঠিক কবে এটি চালু হবে, তা নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি তাকাতা।
সূত্র : রয়টার্স



