ট্রাম্প-মাস্ক দ্বন্দ্বে বিপাকে নাসা

ট্রাম্প-মাস্ক বিরোধ ছাড়াও হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত বাজেট ছাঁটাই নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে। নাসার সব বিভাগেই বাজেট কমানোর প্রস্তাব এসেছে, কেবল মঙ্গল অভিযানে ১০০ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত বরাদ্দ ছাড়া।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
নাসা
নাসা |সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসা সবচেয়ে বড় আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও স্পেসএক্সের প্রধান ইলন মাস্কের মধ্যে একটি বড় বাজেট বিলকে ঘিরে সাম্প্রতিক বিরোধ এ সংকটকে আরো গভীর করেছে।

বিবিসি বলছে, হোয়াইট হাউসের প্রস্তাবিত বাজেটে নাসার অর্থ বরাদ্দ প্রায় এক চতুর্থাংশ কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা ও মিশনে বাজেট কাটছাঁট হবে প্রায় ৫০ শতাংশ। এতে অন্তত ৪০টি চলমান ও উন্নয়নাধীন মহাকাশ মিশন বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

নাসা বর্তমানে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে রসদ ও নভোচারী পাঠাতে ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের ফ্যালকন ৯ রকেটের ওপর নির্ভরশীল। ভবিষ্যতে চাঁদ ও মঙ্গলে নভোচারী পাঠানোর জন্য স্পেসএক্সের স্টারশিপ রকেট ব্যবহারের পরিকল্পনাও রয়েছে। কিন্তু ট্রাম্প সম্প্রতি হুমকি দিয়েছেন, মাস্কের কোম্পানির সাথে ফেডারেল চুক্তি বাতিল করা হতে পারে।

ওপেন ইউনিভার্সিটির মহাকাশ বিজ্ঞানী ড. সাইমিয়ন বারবার বলেছেন, ‘এ অনিশ্চয়তা মানব মহাকাশ কর্মসূচির ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে। মহাকাশ গবেষণা সরকার, বিভিন্ন কোম্পানি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও সহযোগিতার ওপর নির্ভর করে।’

ট্রাম্প-মাস্ক বিরোধ ছাড়াও হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত বাজেট ছাঁটাই নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে। নাসার সব বিভাগেই বাজেট কমানোর প্রস্তাব এসেছে, কেবল মঙ্গল অভিযানে ১০০ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত বরাদ্দ ছাড়া।

প্ল্যানেটারি সোসাইটির স্পেস পলিসি প্রধান কেসি ড্রেয়ার বলেন, ‘এ বাজেট ছাঁটাই যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ কর্মসূচির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সংকট।’

নাসা বলছে, তারা যেসব মিশন চালিয়ে যেতে চায় তা চাঁদ ও মঙ্গলে অভিযানের সাথে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এ পরিবর্তনের ফলে নাসার অগ্রাধিকার মৌলিকভাবে বদলে যাবে।

তবে হোয়াইট হাউসের প্রস্তাবিত বাজেট চূড়ান্তভাবে এখনো কংগ্রেসে অনুমোদিত হয়নি। কেসি ড্রেয়ার বলছেন, কিছু রিপাবলিকান বাজেট ছাঁটাইয়ের বিরোধিতা করছেন। তবে রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হলে বাজেট পাস না হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। ফলে এ বাজেটই কার্যকর হয়ে যেতে পারে, যা একবার বাস্তবায়িত হলে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা প্রায় অসম্ভব হবে।