যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সুরক্ষার সাথে সম্পর্কিত গোপনীয় নথি অবৈধভাবে নিজের কাছে রাখার অভিযোগে পররাষ্ট্রনীতি ও প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ অ্যাশলে জে টেলিসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বাড়ি থেকে এক হাজারেরও বেশি পাতার ‘অতি গোপনীয়’ নথি উদ্ধার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সংবেদনশীল নথি অবৈধভাবে রাখা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে চীনের সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে গোপনে দেখা করার অভিযোগও তোলা হয়েছে।
অ্যাশলে টেলিস ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ এশিয়ার পররাষ্ট্রনীতি-বিষয়ক বিশ্লেষক হিসেবে তার পরিচিতি রয়েছে। তিনি অনেক বছর ধরে মার্কিন প্রশাসনের সাথে কাজ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের অধীনে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা হিসেবে ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতরের কনট্রাক্টর হিসেবে কাজ করছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইস্টার্ন ডিসট্রিক্ট অফ ভার্জিনিয়ার অ্যাটর্নি অফিস মঙ্গলবার জানিয়েছে, দেশের জাতীয় সুরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য অবৈধভাবে রাখার অভিযোগে অ্যাশলে টেলিসকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে হয়েছে, টেলিসের বাড়ি থেকে এক হাজারেরও বেশি পাতার ‘টপ সিক্রেট’ বা অতি গোপনীয় স্তরের নথি উদ্ধার করা হয়েছে। এফবিআইয়ের হলফনামায় টেলিসকে স্টেট ডিপার্টমেন্টের অবৈতনিক উপদেষ্টা ও প্রতিরক্ষা বিভাগের (পেন্টাগন) কন্ট্রাক্টর হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই প্রতিরক্ষা বিশ্লেষককে গ্রেফতার করা হয়েছিল শনিবার এবং সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের একজন কর্মকর্তার পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হলেও তিনি এই নিয়ে আর কিছু মন্তব্য করতে রাজি হননি। অন্যদিকে পেন্টাগন জানিয়েছে, বিচারাধীন কোনো বিষয় নিয়ে তারা মন্তব্য করবে না।
ভার্জিনিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় জেলার মার্কিন অ্যাটর্নি লিন্ডসে হ্যালিগান জানান, ৬৪ বছর বয়সী টেলিসকে সপ্তাহান্তে গ্রেফতার করা হয়। তিনি বলেন, ‘আমরা মার্কিন জনগণকে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক দুই ক্ষেত্রে সব ধরনের হুমকি থেকে রক্ষা করতে প্রতিশ্রতিবদ্ধ। এই মামলায় যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে তা আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার জন্য ব্যাপক হুমকির কারণ।’
তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি ভারতের মুম্বাইয়ে বড় হয়ে ওঠা অ্যাশলে টেলিস। তবে তার আইনজীবী ডেবোরা কার্টিস বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, ‘শুনানির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, যেখানে আমরা প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারব।’
প্রসঙ্গত, দোষী সাব্যস্ত হলে অ্যাশলে টেলিসের সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড ও দুই লাখ ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
সূত্র : বিবিসি