ইলন মাস্কের সাথে সম্পর্ক শেষ : ডোনাল্ড ট্রাম্প

তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তাদের মধ্যকার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে বলে তিনি মনে করেন কি-না। তিনি বলেছেন, ‘আমি এটাই ধরে নেব, হ্যা।’

নয়া দিগন্ত অনলাইন
ডোনাল্ড ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প |সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইলন মাস্কের সাথে তার সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে।

শনিবার এনবিসি নিউজকে তিনি এ কথা বলেছেন।

তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তাদের মধ্যকার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে বলে তিনি মনে করেন কি-না। তিনি বলেছেন, ‘আমি এটাই ধরে নেব, হ্যা।’

এরপর তাকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়, তিনি এ সম্পর্ক আবার জোড়া লাগাতে চান কি-না তখন তিনি বলেন, ‘না।’

তার ও ইলন মাস্কের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিরোধ প্রকাশ হওয়ার পর ট্রাম্পের দিক থেকে আসা সর্বশেষ মন্তব্য এটি।

মূলত প্রেসিডেন্টের কর ও ব্যয়-সংক্রান্ত একটি বিলের প্রকাশ্য সমালোচনার পর প্রযুক্তিবিষয়ক এই ধনকুবেরের সাথে তার সম্পর্কের অবনতি হয়।

হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে রিপাবলিকানরা অল্প ব্যবধানে একটি বিশাল কর ও ব্যয় বিল পাস করে এবং গত মাসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একটি বড় জয় এনে দেয়। এটি এখন সেনেটে আছে।

এর আগে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে প্রচুর অর্থ ব্যয় করেন মাস্ক। পরে তিনি হোয়াইট হাউজে কাজ করার সুযোগ পান।

রিপাবলিকানদের একটি বড় অংশই এ বিষয়ে প্রেসিডেন্টকে সমর্থন দিচ্ছেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, ইলন মাস্ক বেশি উত্তেজিত হয়ে গেছেন এবং সম্ভবত ফিরে আসার জন্য তাকে আর কখনোই স্বাগত জানানো হবে না।

জেডি ভ্যান্স একটি পডকাস্টে বলেছেন, টেসলা ও স্পেসএক্স সিইওর প্রেসিডেন্টকে আক্রমণ করা ছিল একটি 'বড় ভুল'।

কয়েক সপ্তাহ ধরে মাস্ক আইনে স্বাক্ষর করা নিয়ে প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করছেন এবং তিনি বিলটিকে 'বড় সুন্দর বিল' হিসেবে কটাক্ষ করেছেন।

তিনি বলেছেন, বিলটি পাশ হলে জাতীয় বাজেটে এটি কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার ঘাটতি যোগ করবে এবং তিনি সরকারের দক্ষতা বিভাগের কাজে ও সরকারের ব্যয় কমানোর জন্য যে কাজ করেছেন সেটি হেয় করা হবে।

মাস্ক ১২৯ দিন এ বিভাগে কাজ করার পর তা ছেড়ে দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি বিলটির তীব্র সমালোচনা করেছেন। তবে সরাসরি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমালোচনা তিনি করেননি।

বৃহস্পতিবার অবশ্য ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি মাস্কের আচরণে 'হতাশ'।

মাস্ক এর জবাব দিয়েছেন সামাজিক মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার)। তিনি বলেছেন, তিনি না থাকলে ট্রাম্প নির্বাচনে হারতেন। একইসাথে তিনি পরলোকগত যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টাইন সম্পর্কিত অপ্রকাশিত ফাইলগুলোতে ট্রাম্পের নাম থাকার ইঙ্গিত দেন।

পরে তিনি পোস্টগুলো ডিলিট করেছন এবং এপস্টাইনের আইনজীবীরাও এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।

পরে নিজের সামাজিক মাধ্যমে ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, মাস্ক ‘পাগল’ হয়ে গেছে। একটি পোস্টে তিনি ফেডারেল সরকারের সাথে মাস্কের চুক্তি বাতিলের হুমকি দেন।

এনবিসি নিউজকে ট্রাম্প আরো বলেছেন, মাস্ক ‘প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের প্রতি অসম্মানজনক’ আচরণ করেছেন।

তিনি বলেছেন, ‘আমি মনে করি এটা খুবই খারাপ। কারণ তিনি অসম্মান করেছেন। আপনি প্রেসিডেন্ট কার্যালয়কে অসম্মান করতে পারেন না।’

মাস্ক বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছেন তিনি।

সামাজিক মাধ্যমে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, আগামী বছরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে তিনি কয়েকজন ট্রাম্পবিরোধীকে সমর্থন জানাতে পারেন।

আগামী নির্বাচনে ইলন মাস্ক ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে সমর্থন দিতে পারেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, ‘তাকে মারাত্মক পরিণতির মুখে পড়তে হবে।’

সূত্র : বিবিসি