সিরিয়ায় ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনের অবসান ও নতুন সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশটির ওপর থেকে পূর্ণাঙ্গ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতের পর এটি একটি নাটকীয় নীতিগত পরিবর্তন।
ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপির সূত্রে বাসস জানায়, মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সিরিয়াকে এখন একটি স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত হতে হবে, আর আজকের এই পদক্ষেপ দেশটিকে উজ্জ্বল, সমৃদ্ধ ও স্থিতিশীল ভবিষ্যতের পথে নিয়ে যাবে বলে আমরা আশা করি।’
এ ঘোষণার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগের সপ্তাহের ঘোষণা আনুষ্ঠানিক রূপ পেল।
মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় ট্রাম্প আচমকা ঘোষণা দেন, তুরস্ক ও সৌদি আরবের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিনি ‘নৃশংস ও পঙ্গু করে দেয়া’ আসাদ যুগের সময়ে দেয়া নিষেধাজ্ঞা সিরিয়ার ওপর থেকে তুলে নিচ্ছেন।
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ফলে সিরিয়ার নতুন সরকার এখন বিনিয়োগ গ্রহণ করতে পারবে, তবে শর্ত থাকবে- দেশটি কোনো উগ্রবাদী সংগঠনকে আশ্রয় দেবে না এবং ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
একইসাথে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর এক আদেশ জারি করেছে, যার ফলে সিরিয়ার পুনর্গঠনে বিদেশী মিত্র ও সহযোগী দেশগুলোর অংশগ্রহণে আর কোনো বাধা থাকছে না। এতে দেশটিতে ব্যবসা-বিনিয়োগের নতুন দ্বার খুলে যাচ্ছে।
এ অনুমোদনের আওতায় রয়েছে সিরিয়ায় নতুন বিনিয়োগ, আর্থিক সেবা প্রদান এবং দেশটির খনিজ তেল সম্পর্কিত লেনদেন। এছাড়া সিরিয়ার নতুন সরকার ও পূর্বে নিষিদ্ধ ঘোষিত কিছু সংস্থার সাথে লেনদেনও এখন থেকে বৈধ।
সিরিয়ায় ১৪ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধকালে যুক্তরাষ্ট্র দেশটির ওপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। আসাদ শাসন চলাকালীন দেশটির পুনর্গঠন কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারীদেরও শাস্তি দেয়ার হুমকি দিয়েছিল ওয়াশিংটন।
তবে ইসলামপন্থীদের নেতৃত্বে পরিচালিত এক রাজনৈতিক অভিযানে আসাদ সরকার পতনের পর দেশটির নতুন প্রশাসন পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছে।