গাজায় যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ত্রাণ প্রবেশে বাধা, ক্ষুধায় কাতর ফিলিস্তিনিরা

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির জ্যেষ্ঠ মুখপাত্র বলেন, ‘একটি বড় বাধা হলো গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় ক্রসিংগুলোর ক্রমাগত বন্ধ থাকা। ত্রাণ কনভয়গুলোকে দক্ষিণ দিক থেকে ধীরগতির ও দুর্গম পথ অনুসরণ করতে বাধ্য করা হয়।’

নয়া দিগন্ত অনলাইন
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা |সংগৃহীত

জাতিসঙ্ঘের একজন কর্মকর্তা সতর্ক করে জানিয়েছেন, গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে সময়ের সাথে পাল্লা দিচ্ছে ত্রাণ সংস্থাগুলো। তবে ইসরাইলের অব্যাহত বিধিনিষেধের ফলে সরবরাহে বড় বাধা তৈরি হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসঙ্ঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) একজন জ্যেষ্ঠ মুখপাত্র আবির এতেফা উল্লেখ করেছেন, গত মাসে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে সাহায্য সরবরাহ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

কিন্তু গাজায় মাত্র দুটি ক্রসিং খোলা আছে বলে জানিয়েছেন তিনি। যা ডব্লিউএফপি ও অন্যান্য সংস্থাগুলোর ত্রাণ সরবরাহ ব্যাপকভাবে সীমিত করছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের পূর্ণ সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন। ত্রাণ কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নেয়ার জন্য আমাদের সবকিছুর প্রয়োজন। আমরা সময়ের সাথে পাল্লা দিচ্ছি। শীতকাল আসছে। মানুষ এখনো ক্ষুধার্ত এবং চাহিদাও অনেক বেশি।’

ডব্লিউএফপি বর্তমানে গাজাজুড়ে ৪৪টি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র পরিচালনা করে। সংস্থাটি জানায়, তারা ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে এই অঞ্চলে দশ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে খাদ্য প্যাকেজ সরবরাহ করেছে।

কিন্তু ইতেফা সাংবাদিকদের বলেন, গাজায় যেই পরিমাণ খাদ্য পৌঁছাচ্ছে তার পরিমাণ অপর্যাপ্ত। উত্তর গাজায় ত্রাণ পৌঁছানো এখনো একটি চ্যালেঞ্জ, সেখানে বিশ্বের শীর্ষ ক্ষুধা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আগস্ট মাসে দুর্ভিক্ষের ঘোষণা দিয়েছিল।

তিনি বলেন, ‘একটি বড় বাধা হলো গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় ক্রসিংগুলোর ক্রমাগত বন্ধ থাকা। ত্রাণ কনভয়গুলোকে দক্ষিণ দিক থেকে ধীরগতির ও দুর্গম পথ অনুসরণ করতে বাধ্য করা হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘ব্যাপক পরিমাণে খাদ্য সরবরাহের জন্য সব ক্রসিং খোলা থাকা প্রয়োজন, বিশেষ করে উত্তরের ক্রসিংগুলো। গাজাজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোতে সম্পূর্ণ প্রবেশাধিকার অত্যন্ত প্রয়োজন। যাতে খাদ্য দ্রুত ও দক্ষতার সাথে প্রয়োজনীয় স্থানে পরিবহন করা যায়।’

যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরাইলি সেনাবাহিনী তথাকথিত ‘হলুদ রেখা’তে সরে যাওয়ার পর সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি গাজার উত্তরে তাদের বাড়িতে ফিরে এসেছে।

কিন্তু ইসরাইলের দুই বছরের বোমাবর্ষণের ফলে অধিকাংশ ফিলিস্তিনিরই বাড়িঘরসহ আশপাশের এলাকা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। অনেক পরিবার এখনো বাস্তুচ্যুত এবং তাঁবু ও অন্যান্য অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে।

সূত্র : আল জাজিরা