ঝুঁকিতে অরস্টেডের মূলধন সংগ্রহ

ট্রাম্প প্রশাসনের বাধায় যুক্তরাষ্ট্রে উইন্ড প্রকল্প স্থগিত

এর ফলে রোড আইল্যান্ডের উপকূলে অবস্থিত ‘রেভোলিউশন উইন্ড’ প্রকল্পের নির্মাণকাজ স্থগিত হয়ে যায়। অথচ প্রকল্পটির কাজ এরই মধ্যে ৮০% শেষ হয়েছে এবং ৬৫টি টারবাইনের মধ্যে ইতোমধ্যে ৪৫টি স্থাপন করা হয়ে গেছে।

রাজিয়া খাতুন

সারসংক্ষেপ

  • অরস্টেডের প্রকল্প ৮০% সম্পন্ন হওয়ার পর তা স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র
  • যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আদেশে ঝুঁকিতে পড়েছে ৯.৪২ বিলিয়ন ডলারের শেয়ার ইস্যু পরিকল্পনা
  • প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বারবার বায়ু বিদ্যুৎখাতকে সমালোচনা করেছেন।

ডেনমার্কভিত্তিক বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প উন্নয়নকারী প্রতিষ্ঠান অরস্টেডের (ORSTED.CO) বহুল প্রতীক্ষিত মূলধন সংগ্রহের পরিকল্পনা বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রায় শেষ পর্যায়ে থাকা একটি সাগর উপকূলবর্তী উইন্ড ফার্ম প্রকল্পের নির্মাণ হঠাৎ স্থগিত করায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, এ ঘটনার পর সোমবার অরস্টেডের শেয়ারের দাম চাপের মুখে পড়তে পারে।

অরস্টেড সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এ আদেশ সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানটি তাদের ঘোষিত রাইটস ইস্যু পরিকল্পনার কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। ডেনমার্ক সরকার এ পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। ড্যানিশ সরকারের এ কোম্পানিতে ৫০.১% মালিকানা আছে।

এক বিবৃতিতে অরস্টেড জানায়, তাদের পরিকল্পিত রাইটস ইস্যু মূলধন কাঠামোকে শক্তিশালী করার জন্য যথেষ্ট। যুক্তরাষ্ট্রের উইন্ড প্রকল্পগুলো ঘিরে বর্তমান অনিশ্চয়তাও তারা এই পরিকল্পনার মধ্যে বিবেচনা করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যুরো অফ ওশান এনার্জি ম্যানেজমেন্ট (বিওইএম) শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাতে স্টপ-ওয়ার্ক অর্ডার জারি করে। এর ফলে রোড আইল্যান্ডের উপকূলে অবস্থিত ‘রেভোলিউশন উইন্ড’ প্রকল্পের নির্মাণকাজ স্থগিত হয়ে যায়। অথচ প্রকল্পটির কাজ এরই মধ্যে ৮০% শেষ হয়েছে এবং ৬৫টি টারবাইনের মধ্যে ইতোমধ্যে ৪৫টি স্থাপন করা হয়ে গেছে।

চলতি মাসের শুরুতে প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা দিয়েছিল, তারা একটি রাইটস ইস্যুর মাধ্যমে ৬০ বিলিয়ন ড্যানিশ ক্রোন (প্রায় ৯.৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) সংগ্রহ করবে। ঠিক এই সময়ে প্রকল্প স্থগিত হওয়াকে প্রতিষ্ঠানটির জন্য বড় ধাক্কা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

সিডব্যাংকের বিশ্লেষক জ্যাকব পেডেরসেন রয়টার্সকে বলেন, ‘মূলধন সংগ্রহের ক্ষেত্রে এটা একটা বড় বাধা। আমি সত্যিই বিস্মিত।‘

আলফাভ্যালুর বিশ্লেষক পিয়েরে আলেকজান্দ্রে র‍্যামন্ডেনক মনে করেন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এই পদক্ষেপ রাইটস ইস্যুর সফলতাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

তিনি বলেন, ‘এটি ছিল বড় ধরনের ধাক্কা। প্রকল্পের কাজ এতটা শেষ হওয়ার পর এভাবে বাধা দেওয়া যুক্তরাষ্ট্র সরকারের রাজনৈতিক জিম্মি নীতিরই বহিঃপ্রকাশ।’

উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই নতুন অফশোর উইন্ড লিজ অনুমোদন স্থগিত করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এসব প্রকল্পের পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক প্রভাব আরও পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বায়ু বিদ্যুৎ খাতকে সমালোচনা করে আসছেন এবং একে ‘কুৎসিত, অবিশ্বাস্য ও ব্যয়বহুল’ আখ্যা দিয়ে আসছেন।

এদিকে, ১১ আগস্ট রাইটস ইস্যুর পরিকল্পনা ঘোষণার পর থেকে অরস্টেডের শেয়ারের দাম ইতোমধ্যেই ৩০% কমেছে। নতুন এই স্থগিতাদেশে শেয়ারের দামে আরও পতনের আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

রয়টার্স অবলম্বনে।