স্বর্ণের শুল্ক নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করবে যুক্তরাষ্ট্র, ফিউচার্স মার্কটে রেকর্ড দাম

বিশ্বব্যাপী বুলিয়ন ব্যাংকগুলো প্রায়ই মার্কিন ফিউচার বাজারকে ভৌত বুলিয়ন বাজারে লেনদেনের জন্য হেজিং টুল হিসেবে ব্যবহার করে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা
যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা |সংগৃহীত

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সর্বশেষ শুল্ক বৃদ্ধির পদক্ষেপ কিছু সোনার বারের উপর প্রযোজ্য হবে কিনা তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে শুক্রবার মার্কিন ফিউচার গোল্ডের বাজারে সোনার দাম রেকর্ড সর্বোচ্চে পর্যায়ে পৌঁছে পরে তা আবার কমেও গিয়েছে।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ সংবাদ জানিয়েছে।

মার্কিন শুল্ক কর্তৃপক্ষ একটি চিঠি জারি করে জানিয়েছে, এক কেজি এবং ১০০ আউন্স (২.৮ কিলো) দু’টি স্ট্যান্ডার্ড ওজনের সোনার বারের শুল্ক আরোপের বিষয় হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা উচিত। কারণ, এ মূল্যবান ধাতু বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যকে উল্টে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে।

কিন্তু বৃহস্পতিবার ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস কর্তৃক প্রথম প্রকাশিত এই আপডেটের পর হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন ‘সোনার বার ও অন্যান্য বিশেষ পণ্যের শুল্ক আরোপ সম্পর্কে ভুল তথ্য স্পষ্ট করে নিকট ভবিষ্যতে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করার পরিকল্পনা করছে।

এর অর্থ হলো ট্রাম্পের সর্বশেষ ‘পারস্পরিক’ শুল্ক থেকে স্বর্ণ পণ্যগুলো অব্যাহতি পাবে কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়, যা সুইজারল্যান্ড থেকে আসা পণ্যের উপর নতুন ৩৯ শতাংশ শুল্ক আরোপসহ কয়েক ডজন অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে।

শুক্রবারের শুরুতে, ডিসেম্বর ডেলিভারির জন্য সোনার দাম বিশ্বের বৃহত্তম ফিউচার বাজার কমেক্সে প্রতি আউন্স ৩,৫৩৪.১০ ডলারে পৌঁছায়, যা সর্বকালের রেকর্ড। গ্রিনিচ মান সময় ১৮৩০ নাগাদ দাম ছিল প্রতি আউন্সে প্রায় ৩,৪৬১.৪০ ডলার। নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত সোনা, শুল্ক উদ্বেগ ও ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ইতিমধ্যেই রেকর্ড সর্বোচ্চে পৌঁছেছে।

তবে বৃহস্পতিবার ফিন্যান্সিয়াল টাইমস খবরটি প্রকাশ করার পর, হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানান, ট্রাম্প প্রশাসন শিগগিরই একটি নির্বাহী আদেশ জারি করবে। যাতে ‘স্বর্ণবার ও অন্যান্য বিশেষ পণ্যের শুল্ক আরোপ নিয়ে প্রচলিত ভুল তথ্যগুলো স্পষ্ট্র করা হবে। এই ফলাফলের বিপরীতে প্রত্যাশা করা হয়েছিল যে সোনার বারগুলোকে একটি ভিন্ন শুল্ক কোডের অধীনে শ্রেণিবদ্ধ করা হবে যা ট্রাম্পের দেশব্যাপী ব্যাপক শুল্ক থেকে রেহাই দেবে।

কমার্সব্যাংকের বিশ্লেষক কার্স্টেন ফ্রিটশ শুক্রবার বলেছেন যে সোনার বারের উপর শুল্ক সোনার বাজারের জন্য গুরুতর প্রভাব ফেলবে। কারণ মূল সরবরাহকারী সুইজারল্যান্ড ইতোমধ্যেই বিশাল মার্কিন শুল্কের আওতায় রয়েছে।

এফটি জানিয়েছে, এক কিলো বার হলো কমেক্সে ব্যবসা করা সবচেয়ে সাধারণ রূপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুইজারল্যান্ডের সোনার বার রফতানির সিংহভাগই অন্তর্ভুক্ত।

ফ্রিটশ উল্লেখ করেছে, সুইজারল্যান্ড থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা এই আকারের সোনার বারগুলোতে ৩৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।

ওয়াশিংটন কর্তৃক আরোপিত সর্বশেষ শুল্কের মধ্যে এই স্তরটি সর্বোচ্চ, যা ওয়াশিংটন অন্যায্য বাণিজ্য অনুশীলন হিসেবে বিবেচনা করে তা মোকাবেলা করার জন্য। তারা বৃহস্পতিবার থেকে এটি কার্যকর করেছে।

ফ্রিটশ বলেছেন, সুইজারল্যান্ড সোনার বারের একটি প্রধান সরবরাহকারী দেশ। অনেক সোনার শোধনাগারের আবাসস্থল হচ্ছে সুইজারল্যান্ড। যেখানে নির্দিষ্ট বার আকারে সোনা গলানো হয়।

স্যাক্সো ব্যাংকের পণ্য কৌশল বিভাগের প্রধান ওলে হ্যানসেন আরো বলেন, বিশ্বব্যাপী বুলিয়ন ব্যাংকগুলো প্রায়শই মার্কিন ফিউচার বাজারকে ভৌত বুলিয়ন বাজারে লেনদেনের জন্য হেজিং টুল হিসেবে ব্যবহার করে।

সূত্র : এএফপি/বাসস