ট্রাম্প প্রশাসনের দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা ইলন মাস্কের

মাস্কের পদত্যাগ এমন এক সময়ে সামনে এলো যখন তিনি প্রকাশ্যেই ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ নামের নতুন বাজেট বিল নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
ইলন মাস্কের সাথে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
ইলন মাস্কের সাথে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প |সংগৃহীত

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের এবং টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক জানিয়েছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন থেকে পদত্যাগ করছেন। তিনি বিশেষ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে গত কয়েক মাস ধরে সরকারি ব্যয় হ্রাসে কাজ করছিলেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

স্থানীয় সময় বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া এক বার্তায় মাস্ক বলেন, ‘বিশেষ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আমার নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ায় আমি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানাতে চাই এ সুযোগ দেয়ার জন্য। ডিওজিই মিশন ভবিষ্যতে আরো শক্তিশালী হবে এবং এটি সরকারে একটি জীবনধারায় পরিণত হবে।’

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস ও রয়টার্সকে মাস্কের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মাস্ক চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্প প্রশাসনে যোগ দেন। ট্রাম্পের নবগঠিত ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সির (ডিওজিই) দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে। তার লক্ষ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল বাজেট থেকে অন্তত এক ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় কমানো। তবে ডিওজিইর ওয়েবসাইট অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত তারা মাত্র ১৭৫ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করতে পেরেছে, যা মাথাপিছু ১০৮৮.৯৬ ডলার।

আল জাজিরা বলছে, ট্রাম্প প্রশাসনে মাস্কের নিয়োগ ছিল ১৩০ দিনের জন্য, যা আগামী ৩০ মে নাগাদ শেষ হওয়ার কথা। প্রশাসন জানিয়েছে, ডিওজিইর কাজ চালু থাকবে এবং সরকারকে আরো ছোট ও দক্ষ করে গড়ে তোলার চেষ্টাও অব্যাহত থাকবে।

মাস্কের পদত্যাগ এমন এক সময়ে সামনে এলো যখন তিনি প্রকাশ্যেই ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ নামের নতুন বাজেট বিল নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বিলটি ট্রাম্পের ২০১৭ সালের কর ছাড়ের মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি খাদ্য সহায়তা ও মেডিকেইডের জন্য কাজের শর্ত যুক্ত করেছে।

মাস্ক সিবিএস সানডে মর্নিংকে বলেন, ‘আমি খরচবহুল বিল দেখে হতাশ হয়েছি। সত্যি বলতে এতে ঘাটতি কমানোর বদলে বরং বাড়ানো হয়েছে, যা ডিওজিই টিমের কাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’

এ বিলের আওতায় ট্রাম্পের বেশ কিছু অগ্রাধিকার প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দও রয়েছে। এর মধ্যে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ ও ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের বাজেট বৃদ্ধি রয়েছে।

ট্রাম্পের বিলটি গত সপ্তাহে প্রতিনিধি পরিষদে পাস হয়েছে এবং পরবর্তীতে সিনেটে এটি নিয়ে আলোচনা হবে। বর্তমান ফর্ম্যাটে পাস হলে, বিলটি ডিওজিইর সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেবে কারণ কংগ্রেসনাল বাজেট অফিসের মতে, এটি পাস হলে এটি ২০৩৪ সালের মধ্যে মার্কিন বাজেট ঘাটতি ৩.৯ ট্রিলিয়ন ডলার বাড়িয়ে দেবে।