ট্রাম্প ক্ষমতায় ফেরার পর যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী কমেছে ১০ লাখেরও বেশি

ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতা গ্রহণের সময় জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে রেকর্ড পাঁচ কোটি ৩৩ লাখ অভিবাসী ছিল। তবে জুন নাগাদ সেই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় পাঁচ কোটি ১৯ লাখে।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প |সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী জনসংখ্যা গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাড়ছিল। তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে অভিবাসীদের সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি কমেছে। তিনি অভিবাসনকে দেশের শক্তি নয়, বরং হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

রোববার (২৪ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

পিউ রিসার্চ সেন্টারের একটি নতুন সমীক্ষা অনুসারে, ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতা গ্রহণের সময় জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে রেকর্ড পাঁচ কোটি ৩৩ লাখ অভিবাসী ছিল। তবে জুন নাগাদ সেই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় পাঁচ কোটি ১৯ লাখে। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার মধ্যে জুনে অভিবাসীর হার দাঁড়িয়েছে ১৫.৪ শতাংশে, যা জানুয়ারির ১৫.৮ শতাংশের তুলনায় কম।

পিউ-এর জরিপ থেকে আরো জানা গেছে, জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজার থেকে সাত লাখ ৫০ হাজার অভিবাসী শ্রমিক বেরিয়ে গেছেন। বর্তমানে দেশটির মোট শ্রমশক্তির ১৯ শতাংশই বিদেশে জন্ম নেয়া কর্মী।

পিউ রিসার্চ সেন্টার বেশ কয়েকটি নীতিগত পরিবর্তনের দিকে ইঙ্গিত করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অভিবাসী জনসংখ্যাকে প্রভাবিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০২৪ সালে জো বাইডেনের আশ্রয় আবেদন সীমিত করার সিদ্ধান্ত, যার ফলে আশ্রয়প্রার্থী অভিবাসীদের সীমান্ত অতিক্রম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। এছাড়াও, কেন্দ্রটি অভিবাসনকে লক্ষ্য করে ট্রাম্পের ১৮১টি নির্বাহী পদক্ষেপের দিকে ইঙ্গিত করেছে, যার মধ্যে রয়েছে নতুন অভিবাসীদের আগমন এবং অনাগরিক অভিবাসীদের গণহারে বহিষ্কার।

কেন্দ্রটি জানিয়েছে, জরিপে অভিবাসীদের সাড়া দেয়ার হার কমে যাওয়াও তথ্যের এই পরিবর্তনের একটি কারণ হতে পারে।

এর আগে, জুলাইয়ে দ্য গার্ডিয়ান-এর এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছিল, ট্রাম্প দেশটির অভিবাসন বাস্তবায়ন ব্যবস্থাকে ‘অতিমাত্রায় ত্বরান্বিত’ করেছেন। এর ফলে অভিবাসন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা রেকর্ড সংখ্যক মানুষকে গ্রেফতার করেছেন।

ওই বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২৪ সালের জুনের তুলনায় প্রতিদিনের গড় গ্রেফতার সংখ্যা ২৬৮ শতাংশ বেড়েছে। মার্কিন অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী সংস্থা (আইসিই) সব ধরনের অবৈধ অভিবাসীকে লক্ষ্য করছে, এমনকি যারা কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড নেই তাদেরকেও। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র আট হাজার ১০০ জনেরও বেশি মানুষকে তাদের নিজ দেশের পরিবর্তে অন্য দেশে বিতাড়িত করেছে।

অভিবাসনের ওপর ট্রাম্পের কঠোর পদক্ষেপ থামার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। চলতি সপ্তাহে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, তারা পাঁচ কোটি ৫০ লাখেরও বেশি বিদেশী নাগরিকের ভিসার রেকর্ড পর্যালোচনা করছে। বিশেষ করে যাদের যুক্তরাষ্ট্রে অস্থায়ীভাবে অবস্থান বা ভ্রমণের অনুমতি রয়েছে, এবং প্রয়োজনে তাদের ভিসা বাতিলের সম্ভাবনা যাচাই করছে প্রশাসন।