বিটকয়েনের দিকে ঝুঁকছে টেসলাসহ বিভিন্ন কোম্পানি

রিজার্ভ বৈচিত্র্যকরণ, মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব মোকাবেলা ও বিনিয়োগকারী আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে কোম্পানিগুলো বিটকয়েন কিনছে বলে বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মিডিয়া গ্রুপ ও ইলন মাস্কের মালিকানাধীন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলাসহ আরো অনেক কোম্পানি এখন বিপুল পরিমাণ বিটকয়েন কিনছে। রিজার্ভ বৈচিত্র্যকরণ, মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব মোকাবেলা ও বিনিয়োগকারী আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে কোম্পানিগুলো বিটকয়েন কিনছে বলে বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন।

কারা বিটকয়েনে বিনিয়োগ করছেন

অনেক কোম্পানি বিটকয়েন ধরে রাখে বা ক্রয় করে, যাতে করে তারা মাইনিং কার্যক্রমে অংশ নিতে পারে। অর্থাৎ লেনদেন যাচাই করে ডিজিটাল টোকেন হিসেবে পুরস্কার পায়। টেসলা এক সময় বিটকয়েনে লেনদেন গ্রহণ করেছে, আর ট্রাম্প মিডিয়া শিগগিরই ক্রিপ্টো ইনভেস্টমেন্ট পণ্য বাজারে আনতে চায়।

জাপানের হোটেল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেটাপ্ল্যানেটের মতো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানও মূল ব্যবসা বাদ দিয়ে বিটকয়েন কেনা শুরু করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সফটওয়্যার কোম্পানি স্ট্র্যাটেজি (আগের নাম মাইক্রোস্ট্র্যাটেজি) এখন বিটকয়েন কেনায় মনোযোগী, তাদের হাতে রয়েছে ছয় লাখেরও বেশি টোকেন। যা মোট বিটকয়েনের তিন শতাংশেরও বেশি।

বিশ্লেষক অ্যান্ডি কনস্টান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সফটওয়্যার কোম্পানি স্ট্র্যাটেজির সহ-প্রতিষ্ঠাতা মাইকেল সেলার পাঁচ বছর আগে যখন বিনিয়োগকারীদের জন্য ক্রিপ্টোকারেন্সির সাথে সংশ্লিষ্ট শেয়ার বিক্রির সুযোগ দেন, তখনই তিনি প্রথম বিনিয়োগকারীদের জন্য ‘বাস্তব মূল্য’ তৈরি করেছিলেন।

কেন বিটকয়েনে বিনিয়োগ?

ন্যাটিক্সিস ব্যাংকের টেক বিশেষজ্ঞ এরিক বেনোয়া বলছেন, ‘কোম্পানিগুলো নগদ প্রবাহ বৈচিত্র্য করতে ও মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব ঠেকাতেই বিটকয়েন সংগ্রহ করে।’ বিপদে পড়া কিছু কোম্পানি বিটকয়েনের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি পুনর্গঠন করতে চাইছে। স্ট্র্যাটেজির মূল লক্ষ্য হলো, বিটকয়েন জমা করে তার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা।

আবার, কিছু ক্ষেত্রে বিটকয়েন ব্যবহারিক কাজে লাগে। যেমন- কোইনবেস এক্সচেঞ্জ নিজের রিজার্ভ বিটকয়েন ব্যবহার করে গ্রাহকদের জন্য জামানত হিসেবে।

ঝুঁকি কী?

যুক্তরাষ্ট্রের ডিউক ইউনিভার্সিটির ফিন্যান্স অধ্যাপক ক্যাম্পবেল হার্ভি বলছেন , ট্রাম্প প্রশাসনের অনুকূল নীতির ফলে বিটকয়েনের দাম গত পাঁচ বছরে নয় গুণ বেড়েছে। তবে এর মূল্যের ওঠানামা এনএন্ডপি ৫০০ সূচকের চেয়ে চারগুণ বেশি।

তিনি সতর্ক করেন, ‘একটি কোম্পানির ক্যাশ রিজার্ভ দিয়ে ক্রিপ্টো কেনা খুবই বিপজ্জনক।’ বড় ক্রেতাদের প্রভাবে বর্তমানে বিটকয়েনের মূল্য প্রায় এক লাখ ১৭ হাজার ডলার দাঁড়িয়েছে।

স্ট্র্যাটেজির ছয় লাখ বিটকয়েন একবারে বিক্রি করা প্রায় অসম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি। কারণ একসাথে এত বিটকয়েন বিক্রি মানেই বাজারে ধস নামা।

তিনি আরো বলেন, বিটকয়েনের মূল দর্শন ছিল বিনিময়মাধ্যম হওয়া, জমিয়ে রাখা নয়। কিন্তু এখন তা ইলেকট্রনিক ভল্টে আটকে রয়েছে।

সূত্র : এএফপি/বাসস