সুদানে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের পরেও সঙ্ঘর্ষ আরো তীব্র হতে পারে, জাতিসঙ্ঘের আশঙ্কা

সুদানের সশস্ত্র বাহিনীর সাথে দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলমান সঙ্ঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব গ্রহণের পরেও সঙ্ঘর্ষ আরো তীব্র হতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসঙ্ঘ।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
সুদান সঙ্ঘর্ষের মানচিত্র
সুদান সঙ্ঘর্ষের মানচিত্র |বাসস

সুদানের সশস্ত্র বাহিনীর সাথে দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলমান সঙ্ঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব গ্রহণের পরেও সঙ্ঘর্ষ আরো তীব্র হতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসঙ্ঘ।

জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয়ের প্রধান ভলকার তুর্ক বলেন, ‘পদক্ষেপগুলোর কোনো শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ার লক্ষণ নেই।’

তিনি বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি স্পষ্টভাবে আরো তীব্র সঙ্ঘর্ষের প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। যা দীর্ঘকালীন যন্ত্রণার শিকার মানুষের জন্য আরো বিপদজনক হবে।’

বৃহস্পতিবার আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) জানিয়েছে, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মিসরের উত্থাপিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

তবে সেনাবাহিনীর সমর্থিত সরকার এখনো মার্কিন নেতৃত্বাধীন মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাবের প্রতি সাড়া দেয়নি এবং শুক্রবার সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত রাজধানী খার্তুমে বিস্ফোরণ ঘটে।

গত ২০২৩ সালের এপ্রিলে শুরু হওয়া এই সঙ্ঘাতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং ক্ষুধা সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে।

দুই সপ্তাহেরও কম সময় আগে আরএসএফ দারফুরে সেনাবাহিনীর শেষ প্রধান ঘাঁটি এল-ফাশার শহর দখল করে, যার ফলে তারা দক্ষিণের কিছু অংশ ছাড়াও বিশাল পশ্চিম অঞ্চলের পাঁচটি রাজ্যের রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ লাভ করে।

সেনাবাহিনী সুদানের উত্তর, পূর্ব এবং কেন্দ্রের বেশিরভাগ এলাকায় নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে।

এল-ফাশারের পতন ছিল একটি হিংস্র ঘটনা, যেখানে গণহত্যা, যৌন সহিংসতা এবং লুণ্ঠনের খবর আসে, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিন্দা সৃষ্টি করে।

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক গবেষণাগার বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, এই সপ্তাহের শুরুতে সংগৃহীত স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে যে আরএসএফ শহর থেকে বেসামরিক নাগরিকদের পালানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ বন্ধ করে দিয়েছে।

ইয়েলের এইচআরএল থেকে পাওয়া স্যাটেলাইট ছবিতে সন্দেহভাজন গণকবর দেখানোর পর ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স শুক্রবার সতর্ক করে দিয়েছে, এল-ফাশারে আটকে থাকা লাখ লাখ মানুষের ভাগ্য অজানা।

জাতিসঙ্ঘের মতে, প্রায় ৭০ হাজার মানুষ এল-ফাশার থেকে কাছাকাছি শহরগুলোতে পালিয়ে গেছে, যেখানে আগে প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষ বসবাস করতো।

নবনির্বাচিত এমএসএফ সভাপতি জাভিদ আবদেলমোনেইম বলেন, ‘আমাদের প্রধান উদ্বেগের বিষয় হলো, যদিও আমরা প্রায় ৫ হাজার লোককে এল-ফাশার থেকে তাওয়িলার দিকে আসতে দেখেছি, আমরা জানি না বাকি লাখ লাখ লোক কোথায় গেছে।’

তেল সমৃদ্ধ কোর্দোফান অঞ্চলে সঙ্ঘাত ছড়িয়ে পড়ায় আরো নৃশংসতা সঙ্ঘটিত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

সূত্র : এএফপি/বাসস