অষ্টমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন ক্যামেরুনের বিয়া

বিয়া ১৯৮২ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন এবং গত ২০ বছরে ৭০ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়ে প্রতিটি নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
ক্যামেরুনের প্রেসিডেন্ট পল বিয়া
ক্যামেরুনের প্রেসিডেন্ট পল বিয়া |সংগৃহীত

ক্যামেরুনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন রোববার (১২ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক রাষ্ট্রপ্রধান ৯২ বছর বয়সী পল বিয়া জয়ী হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে তিনি ৪৩ বছর দেশটির ক্ষমতায় আছেন।

ইয়াউন্দে থেকে এএফপি জানিয়েছে, বিয়া ১১ জন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হয়েছেন। এর মধ্যে সাবেক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইসা চিরোমা বাকারি (৭৯)। তিনি মধ্য আফ্রিকান দেশটির ভোটারদের মধ্যে অপ্রত্যাশিত উৎসাহ সৃষ্টি করেছেন। দেশটির অর্ধেক জনসংখ্যা ২০ বছরের কম বয়সী।

একদফা নির্বাচনে ভোট দেয়ার যোগ্য ক্যামেরুনের ৮০ লাখ নাগরিক তাদের জীবদ্দশায় কেবল একজন শাসককে চেনেন। বিয়া ১৯৮২ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন এবং গত ২০ বছরে ৭০ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়ে প্রতিটি নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কাছে বাস্তোস পাড়ায় ভোট দেয়ার পর বিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনো কিছু নিশ্চিত নয়। নির্বাচিত ব্যক্তির নাম জানা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’

ক্যামেরুনের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী স্টিফেন আকোয়া এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের নির্বোধ হওয়া উচিত নয়। আমরা ভালো করেই জানি যে শাসক ব্যবস্থার পক্ষে ফলাফল পাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত উপায় রয়েছে।’

তবে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে প্রচারণা সেই পর্যায়ে সাধারণত যেভাবে দেখা যেত তার চেয়ে ‘অনেক বেশি প্রাণবন্ত’ ছিল। এই জরিপটির তাই অবাক করার সম্ভাবনা বেশি।

বিয়া প্রচারণার সময় তার স্বাভাবিক লো প্রোফাইল বজায় রেখেছেন। মে মাসের পর মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে উপস্থিত হন। তিনি কৌশলগত সুদূর উত্তর অঞ্চলের মারুয়ায় একটি সমাবেশ করেন। সেখানে ১২ লাখ যোগ্য ভোটার রয়েছে এবং এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভোটার ব্লক।

বছরের পর বছর ধরে এটি বিয়ার দুর্গ হিসেবে বিবেচিত হলেও এই অঞ্চলের বেশ কয়েকজন সাবেক মিত্র এখন তার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

পরিবর্তনের লক্ষণ

ক্যামেরুনিয়ানরা জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয়, বিশুদ্ধ পানীয় জল, স্বাস্থ্যসেবা ও মানসম্পন্ন শিক্ষার অভাব নিয়ে অভিযোগ করেছে। কিন্তু তাদের হতাশা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই সীমাবদ্ধ।

আকোয়া বলছেন, ‘অনেক তরুণ ভোট দিতে ইচ্ছুক। পরিবর্তনের একটি ইতিবাচক লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, কিন্তু তা সম্ভবত তরুণদের রাস্তায় নামানোর জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী নয়। যেমনটি আমরা মাদাগাস্কার, তিউনিসিয়া ও অন্যান্য স্থানে দেখেছি।’

সরকার আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রতিনিধিসহ ৫৫ হাজার স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষককে ভোট পর্যবেক্ষণের অনুমতি দিয়েছে। সাংবিধানিক পরিষদ ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করার জন্য সময় পেয়েছে।

কিন্তু বেশ কয়েকটি ইন্টারনেট প্ল্যাটফর্ম বলছে, তারা স্বাধীনভাবে ফলাফল সংগ্রহ করবে। তারা সরকারের সমালোচনা করে বলেছে, সরকার জনমতকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে।

সূত্র : বাসস