গিনি-বিসাউয়ের একদল সেনা কর্মকর্তা দেশটির ‘সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ’ নিজেদের হাতে নেয়ার দাবি করেছেন এবং প্রেসিডেন্ট উমারো সিসোকো এমবালোকে গ্রেফতার করেছেন। এর এক দিন আগেই পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দুই শীর্ষ প্রার্থী নিজেদের বিজয়ী ঘোষণা করেছিলেন।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) টেলিভিশনে দেয়া এক বিবৃতিতে সেনা কর্মকর্তারা নিজেদের ‘হাই মিলিটারি কমান্ড ফর দ্য রিস্টোরেশন অব অর্ডার’ নামে পরিচয় দিয়েছেন। তারা বলেছেন, পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত নির্বাচনী প্রক্রিয়া অবিলম্বে স্থগিত করা হয়েছে।
এছাড়াও স্থল, আকাশ ও পানিসীমা বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি রাতভর কারফিউ জারি করার নির্দেশ দিয়েছেন সেনা কর্মকর্তারা। রাজধানী বিসাউতে নির্বাচন কমিশনের সদর দফতর, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে টানা গোলাগুলির শব্দ শোনা যাওয়ার পরপরই এই পদক্ষেপ নেয়া হয়।
রোববার দেশটিতে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিল। নির্বাচনে মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট উমারো সিসোকো এমবালো ও তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ফার্নান্দো দিয়াস।
এমবালো ফরাসি সম্প্রচারমাধ্যম ফ্রান্স২৪-কে ফোনে বলেন, ‘আমাকে পদচ্যুত করা হয়েছে। আমি বর্তমানে জেনারেল স্টাফ সদর দফতরে আছি।’ প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি প্রধান বিরোধী দল পিএআইজিসি-এর প্রধান ডোমিঙ্গোস সিমোয়েস পেরেইরাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
গতকাল প্রতিবেশী দেশ সেনেগাল থেকে আল-জাজিরার নিকোলাস হক জানান, প্রেসিডেন্ট এমবালোকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, সামরিক বাহিনী ইন্টারনেট বন্ধের চেষ্টা করছে। দেশে কারফিউ চলছে।’
তিনি আরো বলেন, অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী সেনা কর্মকর্তা ডেনিস এন’কানহা প্রেসিডেন্টের রক্ষী বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। যার দায়িত্ব ছিল প্রেসিডেন্টকে রক্ষা করা, তিনিই প্রেসিডেন্টকে গ্রেফতার করেছেন।
১৯৭৪ সালে পর্তুগালের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে গিনি-বিসাউ বেশ কয়েকটি অভ্যুত্থান ও অভ্যুত্থানের চেষ্টার সম্মুখীন হয়েছে। এ সপ্তাহের নির্বাচনের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন ও পর্যবেক্ষকেরা। নির্বাচনে পিএআইজিসি দলকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না দেয়ায় অনেকে এটিকে অন্যায্য বলে মনে করছেন।
সূত্র : আল জাজিরা



