সুদানে আমিরাতি সন্ত্রাসীদের নৃশংস অপরাধের মধ্যে-গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদীদের অপরাধের সাথে যাদের কার্যক্রমের মিল রয়েছে-সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সুদানের ঘটনাবলীর সাথে সম্পর্কিত সংবাদের শীর্ষে একটি নাম উঠে এসেছে- আবু লুলু, যাকে ‘ফাশিরের কসাই’ উপাধি দেয়া হয়েছে।
ফাতিহ আবদুল্লাহ ইদ্রিস আসল নাম। তবে আবু লুলু নামে অধিক পরিচিত। ফাশির শহর নিয়ন্ত্রণে নেয়ার আগে খুব একটা পরিচিত ছিলেন না তিনি। কিন্তু শহরে নৃশংস হত্যাকাণ্ড শুরু হওয়ার পর তার নাম ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। সুদানে বর্বরতা ও সন্ত্রাসের প্রতীক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন তিনি।
যদিও আরএসএফ আবু লুলুর সাথে তাদের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছে; এমনকি তার পরিচয় সম্পর্কে অবহিত নয় বলেও দাবি করেছে; পরবর্তীকালে তাকে গ্রেফতার করে ফাশারের ‘শেলা’ কারাগারে আটক রাখার ঘোষণা দেয়। তবুও তিনি নিজে যে ভয়াবহ ভিডিওগুলো বারবার প্রকাশ করেছেন, তা আরএসএফ সন্ত্রাসীদের সাথে তার সংযোগের ইঙ্গিত দেয় এবং মিডিয়া তাকে ‘ফাশিরের কসাই’ বলে ডাকে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবু লুলুর ছবি ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হলে অসহায় বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে তার অপরাধ প্রকাশিত হয়ে পড়ে।
সুদানে সংযুক্ত আরব আমিরাত-সমর্থিত আরএসএফ গত দুই সপ্তাহ ধরে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে নৃশংস অপরাধ করছে। ফাশিরের স্যাটেলাইট ছবিতে রক্তে ভরা গর্ত এবং মৃতদেহের স্তূপ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু আরএসএফে’র একজন মুখপাত্র কয়েকদিন আগে ঘোষণা করেছিলেন যে ফাশার শহর দখলের সময় অপরাধীদের গ্রেফতারের জন্য একটি অভিযান শুরু হয়েছে।
আরএসএফ’র মুখপাত্র দাবি করেছেন, হাইকমান্ডের নির্দেশে এই গ্রেফতার করা হয় এবং আইনি কমিটি সন্দেহভাজনদের বিচারের আওতায় আনার লক্ষ্যে তদন্ত শুরু করেছে।
আবু লুলু বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে তার সহিংসতার নথিভুক্ত বেশ কয়েকটি অডিও ফাইল প্রকাশ করে দাবি করেছেন-তিনি কোনো দলের সাথে সম্পর্কিত নন এবং স্বাধীনভাবে কাজ করছেন। একটি ফাইলে, তিনি ফাশিরে প্রায় ১,০০০ মানুষকে হত্যা করার কথা গর্ব করে বলেছেন।
যদিও অপরাধী সন্ত্রাসী কোনো দলের সাথে কোনো সম্পর্ক দাবি করেননি, তিনি আরএসএফ-দের দ্বারা অসংখ্য আক্রমণে অংশগ্রহণ করেছেন। প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে আবু লুলুর নৃশংস অপরাধগুলো বেশিরভাগই ফাশারের উত্তরাঞ্চলে এবং তার আশেপাশে কেন্দ্রীভূত হয়েছে। তবে সে যে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী তা বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পেয়েছে এবং তার নাম অনেক যুদ্ধক্ষেত্রে সহিংসতা ও সন্ত্রাসের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
পর্যবেক্ষকরা জোর দিয়ে বলেন, আবু লুলুর মতো ব্যক্তিত্বের উত্থান সুদানজুড়ে বিকশিত ভয়াবহ পরিস্থিতি এবং ব্যাপক নৈতিক পতনকেই প্রতিফলিত করে, যেখানে সন্ত্রাসীরা গর্বের সাথে তাদের অপরাধের ছবি প্রকাশ করে।
সূত্র : পার্সটুডে



