কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর (এআই) সরঞ্জাম ব্যবহার করে অভিবাসীদের ওপর নজরদারি করছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির কর্তৃপক্ষ একই পদ্ধতি ব্যবহার করে মার্কিন নাগরিক নন এমন ব্যক্তি, যারা ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন, তাদের ওপরও নজরদারি চালাচ্ছে। বুধবার (২০ আগস্ট) অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক প্রতিবেদনে এই অভিযোগ করেছে।
অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এই কাজে ‘প্যালানটির’ ও ‘বাবেল স্ট্রিট’ নামের দু’টি প্রতিষ্ঠানের এআই টুল ব্যবহার করছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক পর্যালোচনায় জানিয়েছে, ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটির নথি থেকে জানা গেছে, এই এআই কোম্পানিগুলোর সরবরাহ করা সফটওয়্যার দিয়ে গণ-নজরদারি ও মানুষকে চিহ্নিতকরণ করা সম্ভব। এর মাধ্যমে প্রায়ই লক্ষ্যবস্তু করা হয় যারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন তাদের।
সংস্থাটির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা ও মেক্সিকান-আমেরিকান মানবাধিকার আইনজীবী এরিকা গুয়েভারা-রোসাস বলেন, ‘ফিলিস্তিনপন্থী মতপ্রকাশ দমন ও গণবিতাড়ণ কর্মসূচি চালাতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার আগ্রাসী এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। এর ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এর কারণে বেআইনিভাবে আটক ও গণবিতাড়ণের ঘটনা ঘটছে। যা অভিবাসী ও বিদেশী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করছে।’
অ্যামনেস্টির গবেষণায় বলা হয়েছে, ‘ক্যাচ অ্যান্ড রিভোক’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে অভিবাসী, শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের ওপর নজরদারি করতে যুক্তরাষ্ট্র এই এআই টুল ব্যবহার করছে।
অ্যামনেস্টি জানায়, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এই কর্মসূচির আওতায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজরদারি, ভিসার অবস্থা পর্যবেক্ষণ ও বিদেশী শিক্ষার্থীদের মতো ভিসাধারীদের ঝুঁকি স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাই করছে।
গুয়েভারা-রোসাস বলেন, ‘মার্কিন প্রশাসনের দমনমূলক কর্মকৌশল বাস্তবায়নে বাবেল এক্স ও প্যালানটিরের ইমিগ্রেশন ওএস-এর মতো সিস্টেমগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘যদি প্যালানটির ও বাবেল স্ট্রিট প্রমাণ করতে না পারে যে তাদের প্রযুক্তির কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে না, তবে তাদের উচিত হবে অভিবাসন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সাথে অবিলম্বে কাজ বন্ধ করা।’
অ্যামনেস্টি দাবি করেছে, এই নজরদারি প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা বাড়তে পারে। এতে তিনি চাইলেই ‘প্রান্তিক মানুষদের নির্বিচারে বহিষ্কার’ করতে পারবেন।
জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেয়ার পর থেকে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে যে তারা ‘উদার’ রাজনীতির প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছে এবং কোনো প্রমাণ ছাড়াই তাদের ইহুদিবিদ্বেষী বলে অভিযোগ করেছেন।
সূত্র : এএফপি/বাসস