শ্রীলঙ্কায় বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১২৩, নিখোঁজ ১৩০

দেশটির সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী শুক্রবার দিনভর উদ্ধারকাজ চালিয়ে শত শত মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়।

নয়া দিগন্ত অনলাইন
শ্রীলঙ্কায় বন্যা কবলিত একটি বাড়ি
শ্রীলঙ্কায় বন্যা কবলিত একটি বাড়ি |সংগৃহীত

শ্রীলঙ্কায় টানা বর্ষণ ও পাহাড় ধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৩। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন আরো ১৩০ জন।

দেশটির সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী শুক্রবার দিনভর উদ্ধারকাজ চালিয়ে শত শত মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়।

হেলিকপ্টার ও নৌকা ব্যবহার করে বিভিন্ন অঞ্চলে আটকে পড়া মানুষকে গাছের মগডাল, বাড়ির ছাদ ও জলাবদ্ধ গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয়।

শ্রীলঙ্কারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি) জানায়, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কেন্দ্রীয় এলাকায় বহু মানুষ কাদায় চাপা পড়ে মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় কিছু এলাকায় ৩৬০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। রাজধানী কলম্বোর কাছে ভারত মহাসাগরে পতিত হওয়া কেলানি নদী শুক্রবার উপচে পড়ে পার্শ্ববর্তী অঞ্চল প্লাবিত করে।

কাডুওয়েলার বাসিন্দা ৫৬ বছর বয়সী ভি. এস. এ. রত্নায়েকে জানান, তিন দশকের মধ্যে এটি তাদের এলাকার সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হতে পারে। একই এলাকার বাসিন্দা কালয়ানি দুইটি পরিবারকে আশ্রয় দিয়েছেন, যাদের বাড়ি প্লাবিত হয়েছে।

দেশজুড়ে অন্তত ৩,০০০ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ১৮,০০০-র বেশি মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। উত্তরাঞ্চলের অনুরাধাপুরায় এক ব্যক্তি বাড়ির ভেতর পানি ঢুকে পড়ায় নারকেল গাছে উঠে আশ্রয় নিলে একটি এয়ার ফোর্স হেলিকপ্টার তাকে উদ্ধার করে।

ডিএমসি জানায়, আরো বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘দিতওয়া’ উত্তর দিক থেকে সরতে সরতে রোববারের মধ্যে ভারতের তামিলনাড়ু উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শ্রীলঙ্কার মানুষের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে জরুরি সহায়তা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

২০১৬ সালের ভয়াবহ বন্যার তুলনায় এবার ক্ষতির মাত্রা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ডিএমসি। স্থানীয় এক নারী টেলিভিশনে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমরা ছয়জন একসঙ্গে আছি, তার মধ্যে দেড় বছরের একটি শিশু রয়েছে। পানি যদি আরো কয়েক ধাপ ওঠে, আমাদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা থাকবে না।”

শুক্রবার চা-বাগানসমৃদ্ধ কেন্দ্রীয় অঞ্চল থেকে আটকে পড়া বহু পর্যটককে কলম্বোতে সরিয়ে আনা হয়। মৌসুমি বর্ষার এই সময় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টিপাত আরো তীব্র হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভবিষ্যতে আরো ঘন ঘন বন্যার ঝুঁকি রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন। চলতি সপ্তাহের প্রাণহানি গত বছরের জুনের পর সবচেয়ে বেশি; এ সময়ের আগে ডিসেম্বরেও বন্যা ও ভূমিধসে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

সূত্র: এনডিটিভি।